মাতৃভূমি

নিরাপত্তা সহায়তা পেতে ওয়াশিংটনে সম্মতিপত্র পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য মার্কিন অনুদান অব্যাহত রাখতে খুব শিগগির ওয়াশিংটনে সম্মতিপত্র পাঠাচ্ছে ঢাকা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত রূপরেখার ওই সম্মতিপত্রে বাংলাদেশের স্বার্থের বিষয়টি যাতে সুরক্ষিত থাকে, সে বিষয়গুলোও উল্লেখ থাকবে।

গতকাল মঙ্গলবার বৈদেশিক সহায়তার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের লিহেই আইনে তহবিল অব্যাহত রাখার বিষয়ে এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

লিহেই আইনের সংশোধনী অনুযায়ী এখন থেকে বিদেশি নিরাপত্তা বাহিনীর অনুদান অব্যাহত রাখতে সব দেশকেই একটি রূপরেখার আওতায় আসতে হবে। নতুন এই প্রক্রিয়া ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশের কাছে একটি কূটনৈতিকপত্র পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, লিহেই আইনের আওতায় তহবিল পাওয়া অব্যাহত রাখতে হলে ওই রূপরেখার বিষয়ে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মতি জানাতে হবে। বাংলাদেশ এ মাসের শুরুতে একটি সভা করলেও চূড়ান্ত প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানোর অনুরোধ করে যুক্তরাষ্ট্রকে।

গতকাল এ–সংক্রান্ত বৈঠকের পর পররাষ্ট্রসচিব সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ভবিষ্যতে কীভাবে ব্যবহার করা হবে, তা নিয়ে চুক্তি থাকলে তহবিলের ব্যবহার বিষয়ে তাদের দিক থেকে কোনো প্রশ্ন এলে বাংলাদেশকে আগেই জানাবে।

পররাষ্ট্র সচিব জানান, মার্কিন প্রস্তাব বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।

মার্কিন তহবিল ব্যবহারের হিসাব দিতে হবে কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, এখানে অতীত তহবিলের হিসাব–নিকাশের বিষয়টি নেই। ভবিষ্যতে প্রশিক্ষণ ও কেনাকাটার যে বিষয়গুলো আছে, সেক্ষেত্রে এটি কার্যকর হবে। ভবিষ্যতে একটি রূপরেখায় যুক্ত হলে কোথাও তাদের আপত্তি থাকলে তা আগেভাগে তারা জানিয়ে দেবে। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে।

এ বিষয়ে চুক্তি হবে কি না, জানতে চাইলে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, চুক্তি ঠিক না; ওদের একটি চুক্তি তো আছেই। তার আওতায় শুধু বাংলাদেশ না, সব দেশের জন্য একটি রূপরেখা হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করব ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মতি জানাতে। এ জন্য স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সম্মতিপত্রে বাংলাদেশের স্বার্থের কোন বিষয়গুলো থাকবে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, কোনো বিষয়ে আপত্তি থাকলে তা নিয়ে আগাম আলোচনার সুযোগ থাকতে হবে। কোনো সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের সূত্র জানতে চাইব। আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যাপ্ত সময় যেন থাকে, সে বিষয়টিও উল্লেখ থাকবে।

সংশ্লিষ্ট একটি সরকারি সূত্র গতকাল সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সম্মতিপত্র পাঠানোর আগে সে সম্পর্কে আইন মন্ত্রণালয়ের আইনি যাচাইয়ের মতামত (ভেটিং) নেওয়া হবে। এরপর সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে অনুমতি নিয়ে সম্মতিপত্র যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পাঠানো হবে।

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে লিহেই আইনের বিধানের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এর সঙ্গে (লিহেই আইনের সংশোধনী প্রক্রিয়া) র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার কোনো সম্পর্ক নেই। এই প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র ডিসেম্বরের ১ তারিখে দিয়েছে। চিঠি পাওয়ার পর যেভাবে কাজ করা দরকার সেই চেষ্টা চলছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ওটাতে (র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা) অনেক আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। দূতাবাসের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে আইনি পরামর্শক সংস্থা নিয়োগের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

সরকারি চাকরিতে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ডোপ টেস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *