নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: আগামী বছর থেকে অনলাইন নিউজপোর্টাল চালু করতে আগে নিবন্ধন নিতে হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
আজ বুধবার (৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, পত্রিকা প্রকাশ করতে হলে প্রথমে ডিক্লারেশন নিতে হয়, এছাড়া কেউ পত্রিকা প্রকাশ করতে পারে না। অনলাইনের ক্ষেত্রেও তো সেটা হওয়া সমীচীন। সুতরাং আমরা অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া মোটামুটি একটা পর্যায়ে নিয়ে যাবো। আমরা আলোচনা করেছি, আগামী বছর থেকে কোনো অনলাইন নিউজপোর্টাল আত্মপ্রকাশ করার আগেই রেজিস্ট্রেশন নিতে হবে। তাহলে এখানে একটা শৃঙ্খলা আসবে।
তিনি আরও বলেন, আপাতত এটা (চালুর পর নিবন্ধন দেওয়া) রেখেছি এজন্য যে, অনেকগুলো অনলাইন চালু আছে। আমরা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু করেছি অনেক পরে।
সংবাদ প্রচার করা আইপি টিভি বন্ধের উদ্যোগ আসছে
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আইপি টিভি সারা পৃথিবীর বাস্তবতা, এটি নিউ মিডিয়া। এটিকে বন্ধ করা সমীচীন নয়। তবে ব্যাঙের ছাতার মতো আইপি টিভি, এটি হতে পারে না। এজন্য আইপি টিভি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু করেছি। যেগুলো সত্যিকার অর্থে কাজ করতে চায়, তাদেরকে রেজিস্ট্রেশন দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভাবছি যখন কোনো অনুষ্ঠান বা সংবাদ সম্মেলন হবে এক ঝলকে যেন কোনটা টিভি আর কোনটা আইপি টিভি এটা যেন বুঝা যায়। ওখানেও একটা শৃঙ্খলা আনতে হবে। একই ধরনের বুম (মাইক্রোফোন) যাতে ব্যবহার করতে না পারে। সেখানে যেন অ্যাট লিস্ট আইপি টিভি লেখা থাকে।’
সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী কোনও আইপি টিভি খবর প্রকাশ করতে পারবে না জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যে আইপি টিভি খবর প্রচার করে আমরা খুব সহসা সেগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করব।’
আইপি টিভির নিবন্ধনের ক্ষেত্রে অন্য টেলিভিশনের নামের সঙ্গে মিল রেখে নাম দিলে নিবন্ধন দেয়া হবে না বলেও জানান মন্ত্রী।
পত্রিকার প্রচার সংখ্যা বাস্তবানুগ হতে হবে
পত্রিকার প্রচার সংখ্যা বাস্তব সম্মত নয় জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সেখানেও একটা শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ নিয়েছি। (প্রচার সংখ্যা) অন্তত বাস্তবতার কাছাকাছি আনতে হবে। এ রকম অবাস্তব ও ভৌতিক প্রচার সংখ্যা যুগের পর যুগ চলতে থাকবে, সেটি হয় না।’
তিনি বলেন, ‘কিছু পত্রিকা আছে হঠাৎ হঠাৎ বের হয়, যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন বের হয়, যেদিন ক্রোড়পত্র পায় সেদিন বের হয়। এসব পত্রিকার যিনি সম্পাদক, তিনিই রিপোর্টার, তিনিই প্রকাশক। ওনার একটা ব্রিফকেস আছে, পত্রিকাও ব্রিফিকেস বন্দী। ব্রিফকেসে করে সেই পত্রিকার অফিসে অফিসে বিলি করে বেড়ায়। এগুলো আসলে পত্রিকা নয়, আমরা সেগুলো বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে ২১০টির ব্যাপারে সব ডিসিদের কাছে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। আরও ২০০-এর বেশি আছে এ রকমের পত্রিকা। সেগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে, ধীরে ধীরে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এতে ব্যক্তিগত উৎকর্ষতা বাড়বে। একই সঙ্গে পুরো গণমাধ্যম উপকৃত হবে।’
গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে, এটি সংসদে পাস হলে, ইলেকট্রনিক মিডিয়া এমনকি অনলাইন মিডিয়ার সংবাদিকরাও আইনগত সুরক্ষা পাবে। এখন যে কথায় কথায় ছাঁটাই, বিনা নোটিশে ছাঁটাই, তুমি কালকে থেকে আসিও না- এগুলোর বলার সুযোগ থাকবে না।
বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সংলাপে প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন: