ক্রীড়া প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ শেষ হওয়ার পরের দিনই নিউজিল্যান্ডের পথে উড়াল দেবে টেস্ট দল। ঢাকা টেস্ট পাঁচ দিন খেলা হলে পরিবারের সঙ্গেও দেখা করার সুযোগ পাবেন না ক্রিকেটাররা। বায়োসিকিউর বাবল থেকেই যেতে হবে বিমানবন্দরে। ঢাকা টেস্টের স্কোয়াড থেকেই বেছে নেওয়া হবে নিউজিল্যান্ড সফরের ১৭ জনের দল। সাইফ হাসান টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ায় বিকল্প ওপেনার খোঁজা হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডে আগে খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় ইমরুল কায়েসকে নেওয়া হতে পারে।
সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালকে নিয়মিত না পাওয়া, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ না থাকায় হঠাৎ করেই কচিকাঁচার আসর হয়ে পড়েছে টেস্ট দল। সাদমান ইসলাম ও সাইফ হাসানকে নিয়ে অনভিজ্ঞ ওপেনিং জুটি। নাজমুল হোসেন শান্তর ১০ টেস্টের ক্যারিয়ার। মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিম ছাড়া অভিজ্ঞ ব্যাটার নেই বললেই চলে। টি২০ ওপেনার নাঈম শেখকে দিয়ে ওপেনিংয়ের ঘাটতি এখনই পূরণ হওয়ার নয় বলে মনে করেন ক্রিকেট সংশ্নিষ্টরা।
খালেদ মাহমুদ সুজন, রাসেল ডমিঙ্গোরা তরুণদের দিকে বেশি ঝুঁকলে দেশের ক্রিকেটকে ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হবে। অথচ অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের কারণেই ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভালো ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্ট দল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে ২০১৯ সাল থেকে। বিশ্বকাপের পর দল ঢেলে সাজানোর নামে নেওয়া হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারদের। করোনা মহামারির কারণে যারা কিনা এখন পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলেননি। আটটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা মাহমুদুল হাসান জয় টেস্ট দলের সদস্য। দুটি সেঞ্চুরি আর দুটি হাফ সেঞ্চুরিতে ১৪ ইনিংসে ৫৭৪ রান করা জয় চট্টগ্রাম টেস্টে দ্বাদশ ক্রিকেটার ছিলেন।
সিরিজের প্রথম টেস্টে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গেও টপঅর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতা ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জানিয়ে দেয় টিম ম্যানেজমেন্ট ও জাতীয় দল নির্বাচকদের। সে কারণেই কচিকাচার মেলায় নতুন আরেকজন কাঁচা ব্যাটারকে নেওয়ার সাহস করছেন না নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, ‘নিউজিল্যান্ড সফরেও তামিম, সাকিবকে পাব না। ওপেনিংয়ে একজন অভিজ্ঞ ব্যাটার থাকলে ভালো হয়। চেষ্টা করা হবে পুলের তালিকা থেকে একজনকে নেওয়ার।’
চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোয়াড ছিল ১৭ জনের। তিনজন বাড়িয়ে ঢাকা টেস্টের স্কোয়াড করা হয়েছে ২০ জনের। টাইফয়েড নিয়ে স্কোয়াড থেকে ছিটকে যাওয়ায় হোটেলে থাকবেন ১৯ জন। টেস্ট ম্যাচ চলাকালে রিজার্ভ বেঞ্চ ক্রিকেটারদের নিয়মিত অনুশীলনে রাখা হবে বলে জানান নান্নু, ‘২০ জনের স্কোয়াড কেন দেওয়া হলো, এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা। স্কোয়াড বড় করতে হয়েছে নিউজিল্যান্ড সফরের জন্য। বায়ো-বাবলের কারণে কোচরা বাইরে গিয়ে ক্রিকেটারদের অনুশীলন করাতে পারবেন না। দলের সঙ্গে থাকলে প্র্যাকটিস হবে। ইনডোর, একাডেমি ব্যবহার করতে পারবেন কোচরা। আমাদের শুধু ঢাকা টেস্টের কথা চিন্তা করলে হবে না, সামনের সিরিজও মাথায় রাখতে হচ্ছে।’
বর্তমান সিরিজের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে সামনের সিরিজে দলের ভালোর জন্য চিন্তা করলেই হয়। অজানা ভবিষ্যতের চেয়ে বর্তমান বেশি জরুরি। অধিনায়ক মুমিনুল হকও টেস্টে অভিজ্ঞদের দলে ফেরানোর পক্ষে। চট্টগ্রাম টেস্ট শেষে তিনি বলেছেন, ‘জুনিয়রদের দিয়ে না হলে অভিজ্ঞদের ফেরাতে হবে। যাদের দিয়ে ভালো হবে, তারাই টেস্টে খেলবে।’ টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও নিশ্চয়ই বিষয়টি উপলব্ধি করছেন।
আরো পড়ুন:
খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ করদাতা হলেন মাহমুদউল্লাহ