ধূমকেতু প্রতিবেদক: বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও লড়াই করে চলেছে মহামারী কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে। এই লড়াইয়ে এগিয়ে এসেছে সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান হলো চট্টগ্রামের “ফিল্ড হাসপাতাল”। যেখানে রোগীদের চিকিৎসা, খাবার, ওষুধ সবই বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডু উপজেলার ফৌজদারহাটে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিস (বিআইটিআইডি) এর কাছে নির্মিত হয়েছে এই হাসপাতালটি। নাভানা গ্রুপ হাসপাতালটি নির্মাণে জায়গা এবং প্রয়োজনীয় অর্থ দিয়েছে।
এই হাসপাতালে উন্নত দেশের আদলে রোগীর সাথে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে দৈনিক নির্দিষ্ট সময়ে ও প্রয়োজনে পরিবারের মানুষের সাথে ভিডিও কলে কথা বলার ব্যবস্থাও রয়েছে।
হাসপাতালটিতে রয়েছে সাধারণ ৬০ শয্যা। অত্যাধুনিক ভেন্টিলেটরসহ আছে ১০টি আইসিইউ। প্রাথমিকভাবে ১০ জন চিকিৎসক দিয়ে গঠন করা হয়েছে টিকিৎসক টিম। তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যুক্ত আছেন দেশি-বিদেশি কয়েকজন প্রখ্যাত চিকিৎসক। প্রয়োজনে তারা অনলাইনে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
তিনজন চিকিৎসক ও পাঁচজন নার্স সার্বক্ষণিক পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। এর পাশাপাশি আরও পঞ্চাশ জন স্বেচ্ছাসেবক সহায়তা করছেন।
এই হাসপাতালের উদ্যোক্তা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. বিদ্যুৎ বডুয়া। তিনি বলেন, নাভানা গ্রুপের ৬ হাজার ৮০০ বর্গফুটের ফ্লোরে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় মাত্র ১৫ দিনে তৈরি করা হয়েছে এই হাসপাতাল। এটি ব্যতিক্রমধর্মী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। যেখানে সব কিছুই দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে।
তিনি বলেন, ২১ এপ্রিল থেকে যাত্রা শুরু করা এই হাসপাতালে করোনার নানা উপসর্গ নিয়ে আসছেন রোগীরা। তাদের মমতা দিয়ে চিকিৎসা করছেন হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীরা।
ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, আতংক ও ভয়- দুটি বিষয়। আতংকিত হলে মানসিক চাপ বাড়ে। তখনই ভুল করে। অমনোযোগিতায় আরও বেশি ভুল হয়।
আর ভয় পেলে মানুষ সতর্ক থাকে, সচেতন থাকে। ভুলও কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যিনি সুরক্ষিত ড্রেস পরে টাইম বোমা নিষ্ক্রিয় করতে যান তিনি আতংকিত হন না, একটু ভয় পান। কিন্তু সতর্ক থাকেন। তাই বোমা নিষ্ক্রিয় করে সফলও হন।
তিনি বলেন, ফিল্ড হাসপাতালে যারা কাজ করছি তারা কেউ ভীত নই, আতংকিতও নই। কিন্তু খুব বেশি সতর্ক। সুরক্ষিত ড্রেস নিশ্চিত করেই ভয়কে জয় করে কাজ করছি।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘ফিল্ড হাসপাতালটি করোনা প্রতিরোধে আমাদের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করছে। এই হাসপাতালটির মাধ্যমে আরও বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা এবং জরুরি মুহূর্তে আইসিইউ সেবা পাওয়া যাবে। হাসপাতালটি বিআইটিআইডির পার্শ্ববর্তী হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলও পাওয়া যাবে।