আন্তর্জাতিক

নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত কমপক্ষে ৫৭


পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় বন্দুকধারীদের রক্তক্ষয়ী হামলায় কমপক্ষে ৫৭ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোতে চালানো তিনটি পৃথক হামলায় তারা নিহত হন।
নিহতদের মধ্যে ৩৫ জন সাধারণ নাগরিক ও ২২ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অনেকে। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কাদুনা প্রদেশে বন্দুকধারীদের হামলায় কমপক্ষে ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা প্রদেশটির ওই গ্রামে হামলা চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
কাদুনা প্রদেশের নিরাপত্তা কমিশনার স্যামুয়েল অ্যারুয়ান সোমবার জানান, ‘প্রদেশের কাউরা শহরের মাদামাই গ্রামে গত রোববার অজ্ঞাত বন্দুকধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। হামলায় ওই গ্রামের ৩৪ জন বাসিন্দা নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া আরও সাতজন আহত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের প্রতিরোধে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি হয়। হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু’জন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এছাড়া কাদুনা প্রদেশের কাচিয়া জেলায় গত রোববার একটি গির্জায় হামলা করে বন্দুকধারীরা। পৃথক এক বিবৃতিতে স্যামুয়েল অ্যারুয়ান জানান, ‘গির্জায় চালানো ওই হামলায় একজন নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন ব্যক্তি আহত হয়েছেন।’
এদিকে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সোকোতা প্রদেশের একটি দূরবর্তী সামরিক ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের চালানো হামলায় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর ২২ সদস্য নিহত হয়েছেন। গত রোববার এই হামলার ঘটনা ঘটে।
সোকোতার প্রাদেশিক আইনসভার সদস্য আমিনু গোবির বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানান, হামলায় নিহত ১৭ জনের মৃতদেহ রোববার এবং অপর পাঁচ জনের মৃতদেহ সোমবার উদ্ধার করা হয়। তিনি জানান, নিহতদের মধ্যে ১৪ জন সেনা সদস্য, পাঁচ জন পুলিশ কর্মকর্তা এবং বাকি তিন জন সিভিল ডিফেন্স ফোর্সের সদস্য।
এই হামলার পেছনে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোদ্ধা এবং সন্ত্রাসীরা জড়িত বলে সন্দেহ করছে নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী।
পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ডাকাতি, হত্যা, লুটপাট, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বন্দি ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধ বন্ধে নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ পদেক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।
নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আইএস (ইসলামিক স্টেট) পশ্চিম আফ্রিকা শাখার সদস্যরাও নিয়মিত এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ বছর ধরে নাইজেরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *