জাতীয়

নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন

 

জন্ম নিবন্ধন তৈরি

জন্ম নিবন্ধন বা জন্ম সনদ হলো মানুষের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, এই আওতায় একজন মানুষের নাম, লিঙ্গ, জন্মের তারিখ ও স্থান, বাবা-মায়ের নাম, তাদের জাতীয়তা এবং স্থায়ী ঠিকানা সরকারি ডাতাবেজ এ সংরক্ষন করা এবং নিবন্ধনকারীকে জন্মগতভাবে বাংলাদেশি হিসেবে সরকারিভাবে জন্ম সনদ প্রদান করা। ২০০৪ সনের ২৯ নং আইন হিসেবে জন্ম সনদ আইন পাস করা হয়।

জন্ম সন্দের প্রয়োজনীয়তাঃ

জন্ম সনদ একজন মানুষের নাগরিকত্বের প্রমাণ। ভোটার আইডি হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত নানান রকমের কাজে এই জন্ম সনদ বা জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার করা হয়।

১) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি

২)জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তি

৩) বিবাহ নিবন্ধন

৪) সরকারী, বেসরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত সংস্থায় নিয়োগদান

৫) ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু

৬) ভোটার তালিকা প্রণয়ন

৭) জমি রেজিষ্ট্রেশন

৮) ব্যাংক হিসাব খোলা

৯) আমদানি ও রপ্তানী লাইসেন্স প্রাপ্তি

১০) পাসপোর্ট ইস্যু

১১) ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) প্রাপ্তি

১২) ঠিকাদারী লাইসেন্স প্রাপ্তি

১৩) বাড়ির নকশা অনুমোদন প্রাপ্তি

১৪) গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্তি

১৫) ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি

১৬) গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রাপ্তি

জন্ম নিবন্ধন দেখব?

জন্ম নিবন্ধনের দেখার জন্য বা যাচাই করার জন্য এই লিঙ্কে গিয়ে চেক করতে পারবেন।

জন্ম সনদ ফরমেট

জন্ম নিবন্ধন বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় পাওয়া যাবে।

জন্ম নিবন্ধন ইংরেজি ফরমেট

আপনার যদি বাঙ্ঘলা ভাষায় জন্ম সনদ থেকে থাকে, তাহলে আপনি সেটি ইংরেজি ফরমেট এর কপির জন্য আবেদন করতে পারবেন। জন্ম নিবন্ধন ইংরেজি ফরমেট এ পাওয়ার জন্য  ৫০ টাকা ফি প্রদান করতে হবে।

 

জন্ম নিবন্ধন ফি কত?

২০১৭ সালের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গেজেটের অতিরিক্ত সংখ্যায় প্রকাশিত প্রজ্ঞাপণ অনুযায়ীঃ

  • জন্ম ও মৃতুর ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করলে কোন ফি লাগবে না
  • ৪৫ দিন পার হলে, ৫ বছরের মধ্যে নিবন্ধন করলে ২৫ টাকা এবং বিদেশে হলে ১ ডলার।
  • ৫ বছর পর নিবন্ধন করলে ৫০ টাকা
  • জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য ১০০টাকা ফি প্রদান করতে হবে। তারিখ ছাড়া অন্য কোন তথ্য সংশোধন করতে ৫০ টাকা আবেদন ফি প্রদান করতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন কিভাবে অনলাইন করব? এই প্রশ্নটি প্রায় সবাই জানতে চান। কেননা হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন অনেক আগে করা হত, যা ডিজিটাল ভাবে সংরক্ষন হত না। কিন্তু এখন সরকারের উদ্যোগে, ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তাই দেশের সুনাগরিকগণ নিজেদের হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধনটি ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন কার্ড এ পরিনত করতে চান।

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে হলে https://bdris.gov.bd/br/application  এই লিংকে গিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। আপনার এলাকা কোন জোন ও কোন ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত তা জানতেএই লিংক থেকে পিডিএফ ফাইলটি ডাউনলোড করে দেখে নিতে পারেন:http://br.lgd.gov.bd/files/Dhaka%20city%20zonal%20office.pdf 

আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন এর অবস্থা সম্পর্কে জানতে এখানে https://bdris.gov.bd/br/application/status যেতে পারেন

বিভাগ, জেলা প্রভৃতি ধাপ পার হয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত নির্বাচন করার পর স্ক্রিনে একটি অনলাইন ফরম আসবে। অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন ফরম প্রথমে বাংলায় (ইউনিকোড) ও পরবর্তীতে ইংরেজিতে পূরণের পর প্রয়োজনীয় সম্পাদনা করে সংরক্ষণ (Save) বাটনে ক্লিক করতে হবে।

সংরক্ষণ বাটনে ক্লিক করলেই আবেদন পত্রটি সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক কার্যালয়ে স্থানান্তরিত হয়ে যাবে, আবেদনকারীর আর কোনো সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। পরবর্তী ধাপে আবেদন পত্রের মুদ্রিত কপি পাওয়া যাবে, যা আপনি প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।

সনদের জন্য ১৫ দিনের মধ্যে উক্ত আবেদনপত্রের মুদ্রিত কপি ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্রের সত্যায়িত কপিসহ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

জন্ম সনদ তৈরির জন্য যা লাগবে

নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির বয়স পাঁচ বছরের মধ্যে হলে)-

  • তথ্য সংগ্রহকারীর প্রত্যয়ন।
  • অথবা, ইপিআই কার্ডের সত্যায়িত অনুলিপি।
  • অথবা, নিবন্ধক যেরূপ প্রয়োজন মনে করেন জন্ম সংক্রান্ত সেরূপ অন্য কোন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি।
  • অথবা, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বা উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি।
  • অথবা, তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে নিবন্ধক কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোনো এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন।

(নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির বয়স পাঁচ বছরের বেশি হলে)-

  • বয়স প্রমাণের জন্য এমবিবিএস ডাক্তারের এবং জন্মস্থান বা স্থায়ীভাবে বসবাসের স্থান প্রমাণের জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর/সদস্যের প্রত্যয়ন।
  • অথবা, বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক বা তৎকর্তৃক মনোনীত শিক্ষক বা কর্মকর্তার প্রত্যয়ন।
  • অথবা, বয়স ও জন্মস্থান প্রমাণের জন্য ইপিআই কার্ড বা কোনো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের জন্ম সংক্রান্ত ছাড়পত্র বা উক্ত প্রতিষ্ঠান হইতে প্রাপ্ত জন্ম সংক্রান্ত সনদের সত্যায়িত অনুলিপি।
  • অথবা, তথ্য সংগ্রহকারী হিসাবে নিবন্ধক কর্তৃক নির্দিষ্টকৃত কোন এনজিও কর্মীর প্রত্যয়ন।

জন্ম নিবন্ধন কোথায় করবেন?

ব্যক্তির জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানা বা বর্তমানে বসবাস করছেন এমন যেকোনো স্থানের নিবন্ধকের কাছে জন্ম নিবন্ধন করানো যাবে। জন্ম নিবন্ধনের জন্য যারা নিবন্ধক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন:

১) ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা সদস্য;

২) পৌরসভার মেয়র 

৩) সিটি কর্পোরেশনের মেয়র

৪) ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট

৫) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত

উল্লেখ্য, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় জোনাল এক্সিকিউটিভ অফিসারগণ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনসমূহে সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ, বরিশাল, সিলেট ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনে প্রধান কার্যালয়ে এবং নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে পুরাতন পৌরসভা কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণ জন্ম নিবন্ধকের দায়িত্ব পালন করছেন।

মোবাইলে জন্ম নিবন্ধন যাচাই

মোবাইলের মাধ্যমে নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন। আপনার যদি স্মার্টফোন থেকে থাকে, তাহলে ব্রাউজার ব্যবহার করে https://everify.bdris.gov.bd/ এই লিঙ্কে গিয়ে যাচাই করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে গেলে করণীয়

জন্ম সনদ হারিয়ে গেলে সাথে সাথে নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করে একটি সাধারন ডায়েরি করে রাখতে হবে। সেটি ব্যবহার করে পুনরায় অনলাইনে প্রিন্ট কপি বের করতে পারবেন এবং হার্ড কপির জন্য নিকটস্থ নিবন্ধনকারী প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *