ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের সম্প্রসারণ ও রদবদল এনেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ মোদি। নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ৪৩ জন মন্ত্রীকে, যাদের মধ্যে ৩৬ জনই নতুন মুখ। এ নিয়ে মোদির মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ৭৭ জনে। পাশাপাশি বাদ পড়েছেন আগের মন্ত্রিসভার ৬ জন জ্যেষ্ঠ সদস্যও। বুধবার ভারতীয় পার্লামেন্টে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেন।
পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ব্যর্থ হয় নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি। এর প্রায় দুই মাস পর মন্ত্রিসভার রদবদলের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিজের দলের চার এমপিকে মন্ত্রিসভায় স্থান দিলেন নরেন্দ মোদি। তাদের মধ্যে বনগাঁও থেকে নির্বাচিত মতুয়া সম্প্রদায়ের শান্তনু ঠাকুরও আছেন। যিনি গত মার্চে নরেন্দ্র মোদির সফরসঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশে এসেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটারদের খুশি করার উদ্দেশ্যে শান্তনু ঠাকুরকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়া হয়েছে।
শান্তনু ঠাকুরকে মন্ত্রী করার পেছনে অন্য কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, মোদি সরকার এখন পর্যন্ত বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাস্তবায়ন না করায় মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে একধরনের অসন্তুষ্টি বিরাজ করছে। এই আইনের মাধ্যমে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে আজ মন্ত্রিসভায় ডাক পাওয়া অন্য মন্ত্রীদের মধ্যে আছেন সুভাষ সরকার। যিনি বাঁকুড়া থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করেন ও পেশায় গাইনি চিকিৎসক। এ ছাড়া আছেন, আলিপুর থেকে জন বাড়লা ও কোচ বিহার থেকে নিশিথ প্রামাণিক।
মন্ত্রিপরিষদে ডাক পাওয়া পশ্চিমবঙ্গের চার জনের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গ থেকে আছেন শান্তনু ঠাকুর, উত্তরবঙ্গ থেকে জন বাড়লা ও নিশিথ প্রামাণিক এবং মধ্য বাংলা থেকে আছেন সুভাষ সরকার। ভারতের কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার কারণে নানাভাবে সমালোচিত হওয়ায় নতুন মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধনকে।
বাদপড়াদের তালিকায় আরও আছেন আছেন প্রকাশ কেশব জাভাদেকর। যিনি ২০১৪ সাল থেকে মোদি সরকারের অন্যতম মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেন।
এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টুইটার ও ফেসবুকের মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে দ্বন্দ্ব ও নতুন তথ্য-প্রযুক্তি আইনের কারণে বাদ পড়েছেন তথ্য-প্রযুক্তিমন্ত্রী রবি শঙ্কর। ২০১৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম রদ বদল করা হলো নেরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিপরিষদে।
আগামী বছর ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হিসেব উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে বিভিন্ন অঞ্চল ও সামাজিক গোষ্ঠীর মধ্য থেকে নতুন মুখ বেছে সদস্য করা হয়েছে মন্ত্রিসভার।
নতুন মন্ত্রীদের মধ্যে জয়শ্রী দত্ত এম সিন্দিয়ার অন্তর্ভুক্তি বেশ উল্লেখযোগ্য। যিনি গত বছরের মার্চে কংগ্রেস ত্যাগ করে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দেন। আসামের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের ক্ষেত্রেও ঠিক একই ঘটনা। এ ছাড়া, হারদ্বীপ সিং পুরি, কিরেন রিজিজু ও মানসুখ মান্দাভিয়াকেও করা হয়েছে মন্ত্রিসভার সদস্য।