নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: এমনিতেই ঢাকার নাগরিক জীবন ভীষণ যান্ত্রিক। তার উপর দীর্ঘ লকডাউন! এরপর লকডাউন শেষ হতে না হতেই খুলে গেছে অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বেড়ে গেছে ব্যস্ততা। কোথাও যাওয়ার সুযোগও হয়ে ওঠে না অনেকদিন। জীবন কেমন একঘেয়ে হয়ে গেছে। কোনো কিছুতেই মন বসছে না। সঙ্গিনী আর বাচ্চারাও কেমন মনমরা হয়ে গেছে। অথচ তাদেরকে নিয়ে দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার মতো সময় নেই আপনার হাতে। এমন অবস্থায় আপনি যখন উপায় খুঁজছেন কী করা যায়, তখন আপনার খুব কাছেই কাশবনে এলিয়ে পড়ছে আনন্দ। কেন নিজেকে বঞ্চিত করছেন সেই আনন্দ লুটে নেয়া থেকে!
ঢাকার ভেতরে আর খুব কাছেই রয়েছে এমন কিছু জায়গা, যেখানে খোলা নীল আকাশের নিচে কাশফুলের মেলা। কোথাও কোথাও রয়েছে নৌকায় ভ্রমণের সুযোগ। চাইলেই সুন্দর শরৎ বিকেলে সঙ্গিনী বা পরিবারকে সাথে নিয়ে আপনি খুব সহজে সময় আর খরচ দুটো বাঁচিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এসব মনোরম স্থান থেকে।
চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু স্থান সম্পর্কে-
আফতাব নগর: রাজধানীর বুকে রামপুরা ব্রীজের পাশেই আফতাব নগরে প্রতি শরতেই বসে কাশফুলের মেলা। কোনো এক বিকেলে ঘুরে আসতে পারেন আফতাব নগর। রামপুরা ব্রিজের পাশে আফতাব নগরের গেট। গেটের কাছে থেকে রিক্সা ভাড়া করে চলে যেতে পারেন কাশবনে। রিকশায় ওঠার আগে ভাড়া ঠিক করে নেওয়া ভালো।
দক্ষিণখান: কাশবনের মাঝের রাস্তা ধরে হাঁটতে চাইলে যেতে পারেন দক্ষিণখান। খিলক্ষেত বাজার হয়ে উত্তরমুখী যেতে হবে। রাস্তার দুপাশ জুড়েই কাশের রাজ্য। কাশফুলের শুভ্রতায় ভরে উঠবে আপনার মন।
আশুলিয়া: ঢাকার অদূরেই মিরপুর বেড়িবাঁধ হয়ে আশুলিয়ার দিকে গেলে দেখা পাবেন কাশবনের। খোলামেলা জায়গা আর মাতাল বাতাস সব একঘেয়েমি কাটিয়ে দেবে।
দিয়াবাড়ি: উত্তরার দিয়াবাড়ির কাশবনের খবর জানেন না এমন লোক নেই বললেই চলে। দিয়াবাড়ি ছবি তোলার জন্যও বেশ বিখ্যাত। সাদা, নীল বা নীল সাদার কম্বিনেশনের কোনো শাড়ি বা পাঞ্জাবি পড়ে চলে যেতে পারেন দিয়াবাড়ি। তবে সন্ধ্যার আগে ফিরে আসাই ভালো।
হযরতপুর: কেরাণীগঞ্জের হযরতপুর। কালিগঙ্গা নদীর বাঁকে বাঁকে সারি সারি কাশফুল ফুটে আছে। বছিলা সেতু পার হয়ে আটিবাজার ছেড়ে কিছু দূর গেলে হযরতপুর। সেখান থেকে খেয়া নৌকা পার হলে কাশবন। একসাথে কাশবনে যাওয়া আর নৌকায় চড়া দুটোই হয়ে যাবে।
পদ্মার চর: মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাট থেকে যেতে পারেন নদীর বুকে জেগে ওঠা কোনও এক চরে। কাশফুলেও দেখা হবে নৌকাতেও চড়া হবে। তবে নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে।
ওয়াশপুর: মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ থেকে বছিলা সড়ক ধরে ওয়াশপুর। সেখানে বছিলা সেতুর পাশ দিয়ে হাতের বাঁয়ে চলে যাওয়া সড়কে গেলে দেখবেন কাশফুলের রাজ্য।
মায়ার দ্বীপ: মেঘনার বুকে জেগে ওঠা মায়ার দ্বীপ। এ দ্বীপে গেলেও দেখতে পাবেন কাশফুল। ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে করে যেতে হবে বৌদ্দের বাজার। এরপর সেখানে মেঘনার ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যেতে হবে মায়ার দ্বীপ।
ঝিলমিল: বুড়িগঙ্গা দ্বিতীয় সেতু পেড়িয়ে মাওয়া সড়কে যাওয়ার পথে দুই পাশে রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক এলাকা। এখানে বালু ভরাট করা খালি প্লটগুলো হয়ে আছে কাশফুলের রাজত্ব।
আমুলিয়া: ঢাকার ডেমরার আমুলিয়া প্রজেক্টেও দেখা যায় কাশফুলের ঢেউ। সেই সাথে প্রজেক্টের ভেতরের নিরিবিলি শান্ত পরিবেশে খানিকক্ষণ জিরিয়ে নিলেই কেটে যাবে আপনার সব অবসাদ।
আরো পড়ুন: