খোকন কুমার রায়:
কথায় আছে- টাকা মধুর চেয়েও মিষ্টি। এই অতি প্রিয় জিনিসটাও হতে পারে ক্ষতির কারণ। সবচেয়ে বেশি হাতবদল হয় টাকা। এই টাকা অনেক রোগের জীবাণু বহন করতে পারে। কিন্তু টাকা কখনো জীবাণুমুক্ত করা হয় না। বর্তমানে করোনা ভাইরাসটি আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি ও ছোঁয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। প্রতিদিন টাকা-পয়সা অসংখ্য হাত ঘুরে। আক্রান্ত ব্যক্তিটির টাকা-পয়সার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে কোভিড-১৯। কাজেই যতোবার নগদ টাকা-পয়সার লেনদেন করা হবে ততোবার হাত সাবান দিয়ে ভালো করে ধুতে হবে বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে। আর এই ব্যাপারটিতে আমরা উদাসীন। এখন পর্যন্ত দোকানদার, রিকশাচালক বা অন্যান্য ক্ষেত্রে কাউকেই লেনদেন করে হাত পরিষ্কার করতে দেখিনি। দোকানদারগণ টাকা গুণে নিচ্ছেন, দিচ্ছেন এবং হাত পরিষ্কার না করেই জিনিসপত্র দিচ্ছেন। এসব মালপত্র আমরা ঘরে নিয়ে যাচ্ছি এবং বাসার লোকজন হাত দিচ্ছে। এ জীবাণুটি এভাবেও পৌঁছে যেতে পারে আপনার রান্না ঘরে। অতএব, সতর্ক হোন।
অনেকেই শিশুদের হাতে টাকা-পয়সা দিয়ে থাকেন। শিশুরা অভ্যাসবশতঃ হাত বারবার মুখে দেয়। এতে জীবাণু সংক্রমণ হতে পারে। কাজেই টাকা-পয়সা শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন এবং কোনোভাবেই শিশুদের হাতে দেবেন না।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, টাকা লেনদেনের সময় করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
উন্নত দেশগুলোতে যেমন- ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য প্রভৃতি দেশে নগদ টাকার লেনদেন খুবই কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কার্ড ব্যবহৃত হয়। তবুও সেসব দেশে ভাইরাসটি মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে।
দেশের এ প্রান্ত হতে ও প্রান্তে হাতে হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে টাকা-পয়সা, যা হতে পারে করোনার বাহক। আমরা যদি সতর্ক না হই তাহলে নগদ লেনদেনের মাধ্যমেও আক্রান্ত হতে পারি এবং “অর্থই অনর্থের মূল”- প্রবাদটির মতো অর্থও করোনা ভাইরাসের মূল বাহক হতে পারে।
মানুষের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা যায় কিন্তু টাকাকে দূরত্বে রাখা যায় না। সব সময় পকেটে-পকেটে রাখতে হয়। আর আমরা এমনিতেই নগদপ্রেমী জাতি।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।