প্রচ্ছদ

দ্রুততম বিচারে ধর্ষণের কঠোর শাস্তি বিশ্বজুড়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হয় দ্রুততম সময়ে। সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের প্রচলন আছে বিশ্বের অনেক দেশেই। কোথাও মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয় প্রকাশ্য শিরচ্ছেদের মাধ্যমে, কোথাও ফায়ারিং স্কোয়াডে। আবার কোথাও কোথাও মৃত্যুদন্ডের আগে পুরুষাঙ্গ ছেদ বা নপুংসক করে দেওয়ার প্রচলনও আছে। ধর্ষণের কবল থেকে বাঁচতে এ ধরনের কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে দেশগুলো। বাংলাদেশেও দাবি উঠেছে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের। আইনজ্ঞরা বলেন, সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে শুধু মৃত্যুদন্ড দিলেই হবে না, বিচারও করতে হবে দ্রুতগতিতে। পাশাপাশি দেখতে হবে নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।

যে সব শাস্তির বিধান আছে দেশে দেশে :

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্যানুসারে, চীনে ধর্ষণ প্রমাণিত হলেই দোষীর দ্রুত মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়। বিশেষ ক্ষেত্রে তার পুরুষাঙ্গ ছেদও করা হয়।

আরব আমিরাতে সাত দিনের মধ্যে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয় ধর্ষকের।

সৌদি আরবে ধর্ষণের শাস্তি প্রকাশ্যে মৃত্যুদন্ড।

ফ্রান্সে ১৫ থেকে ৩০ বছরের কারাদন্ড, বিশেষ ক্ষেত্রে আজীবন কারাদন্ড দেওয়া হয় ধর্ষককে।

উত্তর কোরিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি ফায়ারিং স্কোয়াডে গুলি, আফগানিস্তানে চার দিনের মধ্যে গুলি বা ফাঁসি, মিসরেও ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়।

এ ছাড়া ইরানে প্রকাশ্যে পাথর নিক্ষেপে মৃত্যুদন্ড অথবা ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয় ধর্ষকের।

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে ইসরায়েলে কমপেক্ষ ১৬ বছর কারাদন্ড, যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ আমৃত্যু কারাদন্ড, ভারতে ১০-১৪ বছর কারাদন্ড এবং বিশেষ ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় ধর্ষককে।

রাশিয়ায় ধর্ষণের শাস্তি তিন থেকে ২০ বছর কারাদন্ড, নরওয়েতে চার থেকে ১৫ বছর কারাদন্ড। গ্রিসে ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয় আগুনে পুড়িয়ে। এ ছাড়া মঙ্গোলিয়ায় ধর্ষিতার পরিবারের হাতেই কার্যকর হয় ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড।

আইনজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করতে দীর্ঘসূত্রতায় পড়তে হয়। আদালতের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে চলে যায় বছরের পর বছর। পাশাপাশি আছে সমাজের বিভিন্ন ধরনের চাপ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ প্রয়োগ করে শাস্তি এড়িয়ে যায় ধর্ষক। উল্টো হেনস্তা হতে হয় ধর্ষিতা ও তার পরিবারকে।

যদিও বাংলাদেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন ও ৯(২) ধারায় ধর্ষণের কারণে মৃত্যু হলে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান রয়েছে।

সাবেক আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, ‘ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের জনদাবির বিষয়টি সংসদ বিবেচনা করতে পারে। তবে আমি বলব, আইনে যে শাস্তিই থাকুক না কেন, বিচারটা যেন দ্রুতগতিতে হয়।’ তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় দীর্ঘ সময় ধরে বিচার চলায় সাক্ষী খুঁজে পাওয়া যায় না, বাদীর মন নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বিচার হতে হবে দ্রুত। খুব দ্রুত সময়ে মামলার চার্জশিট দাখিলের পর কোনো প্রকার মুলতবি ছাড়া বিচার চালাতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এ রকম জঘন্য ঘটনা লাগাতার ঘটতে থাকায় বিদেশেও দেশের সম্মান নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত বিচারের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই কেবল দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা করা যেতে পারে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *