ওমর বিন আমিন, নীলফামারী প্রতিনিধি, ধূমকেতু ডটকম: সাম্প্রতিক বন্যায় নীলফামারীর কমবেশি সব এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমনের বীজতলা। সংকট থেকে বাঁচতে কোনো কোনো কৃষক প্রাচীন ‘দোগছ’ বা ডাবল প্লান্টেশন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন। কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে আপদকালীন অথবা ভাসমান বীজতলা তৈরি করেছেন কেউ কেউ। তবে প্রধান কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, দোগছ পদ্ধতিতে চাষ করলে ধানের চিটা, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয় কম, ফলনও হয় বেশি।
দোগছ পদ্ধতি ব্যবহার করে বীজতলা বাঁচিয়েছেন ডিমলা উপজেলার নাউতারা গ্রামের কৃষক তারা মিয়া। তিনি বলছেন, তিস্তা পাড়ের মানুষ প্রাচীনকাল থেকেই দোগছ পদ্ধতি ব্যবহার করে। এই পদ্ধতিতে বীজতলা থেকে বীজ তুলে পুনরায় ঘন করে দ্বিতীয় বীজতলায় বপন করা হয়। এতে গাছ ছোট হয়, গাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। দ্বিতীয় বীজতলায় মাসখানেক থাকার পর মূল ক্ষেতে বপন করা হয়। মূল কবলিত হলেও সমস্যা হয় না।
একই কথা বললেন ডোমারের সোনারায় গ্রামের কৃষক মোবারক আলী। তিনি জানান, নীচু জমিতে দেরি করে আমন বপন করেন তিনি। বীজ দোগছ করে রাখায় বন্যার শিকার হতে হয়নি তার।
এদিকে বীজতলা নষ্ট হওয়ায় আমন বীজ সংকট হওয়ার কথা মানতে নারাজ কৃষি অধিদপ্তর কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, দপ্তরে যোগাযোগ করলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ প্রদান করা হবে।
পলাশবাড়ী ইউনিয়ন সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পার্থপ্রতীম রায় জানান, নতুনভাবে বীজতলা তৈরি করতে ইতিমধ্যে কৃষকদের মধ্যে সাড়ে চার মে. টন বন্যাসহনশীল জাতের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া অনেক কৃষককে ভাসমান বীজতলা তৈরির কৌশল শেখানো হয়েছে। ফলে নীলফামারীতে আমন বীজ সংকট হওয়ার প্রশ্ন আসে না।
এদিকে জেলার প্রধান কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, বন্যায় বীজতলা বাঁচাতে ডাবল প্লান্টেশন বা দোগছ পদ্ধতি ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে নীলফামারীতে। নীলফামারী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল জানান, ধানের চিটা, পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয় কম, ফলনও হয় বেশি বলে দোগছ পদ্ধতি অন্যান্য জেলায়ও ছড়িয়ে পড়ছে।
চলতি আমন মৌশুমে নীলফামারী জেলায় ১ লাখ ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।