নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: দেশে শুরু হলো করোনা টিকার বুস্টার ডোজ কার্যক্রম। এ জন্য নতুন করে নিবন্ধন করা লাগবে না। প্রথমে সম্মুখ সারির ব্যক্তিদের (চিকিৎসক, নার্স, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, গণমাধ্যমকর্মী ও ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি) বুস্টার ডোজের আওতায় আনা হবে। বুস্টার ডোজ হিসেবে দেয়া হবে ফাইজার টিকা। বুস্টারের পাশাপাশি সারাদেশে চলমান করোনার সাধারণ টিকাদান কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।
আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএসএ) মিলনায়তনে ‘বুস্টার ডোজ প্রদান কার্যক্রম’-এর উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
দেশে প্রথম করোনার টিকা গ্রহণকারী কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তাকেই দেয়া হয় প্রথম বুস্টার ডোজ। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেন জাতীয় অধ্যাপক শায়লা খাতুন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সাংবাদিক আমিরুল মুমিনিন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, দাতব্য প্রতিষ্ঠান আল-মারকাজুল ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুফতি হামজা ইসলাম, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার খাদিজা বেগম প্রমুখ।
এর আগে ফাইজার ছাড়াও মডার্না, অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্মসহ কয়েক ধরনের টিকা দেওয়া হয়েছে।, যারা ফাইজার ছাড়া অন্য টিকা নিয়েছেন, তারা ফাইজারের বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমানে বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজার টিকা দেয়া হবে। এর আগে কে, কোন টিকা নিয়েছেন তা বিবেচনার বিষয় নয়, যারা করোনার টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন, তারা সবাই বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজার নিতে পারবেন। আগে যেভাবে নিবন্ধন করে টিকা নেওয়া হয়েছে, বুস্টার ডোজের ক্ষেত্রে সেভাবে লাগবে না। যারা দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন, সুরক্ষা অ্যাপে সেই তথ্য রয়েছে। টিকাগ্রহীতাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বর রয়েছে সরকারের কাছে। এ ক্ষেত্রে যারা বুস্টার ডোজ পাবেন, তাদের কোথায় কবে আসতে হবে, সেটি এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন টিকার জন্য যত টাকা লাগে সরকার দেবো। ৬০ বছর বয়সীদের বুস্টার ডোজ দিতে যে যে প্রস্তুতি দরকার আমরা নিচ্ছি; আমাদের প্রস্তুতি এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। আমরা সুরক্ষা অ্যাপ আপটেড করছি। আইসিটি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে ২৮ ডিসেম্বরের আগে তারা আপডেট করতে পারবে না। সুরক্ষা অ্যাপে এখন নিবন্ধন করা সম্ভব না হলেও বুস্টার ডোজের কার্যক্রম চলমান থাকবে। কার্ডের মাধ্যমে টিকা নেওয়া যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বেশ কয়েক ধরনের ভ্যাকসিন আমরা দিয়েছি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রটোকল অনুযায়ী দিয়েছি। বুস্টার ডোজও আমরা ডব্লিউএইচওর প্রটোকল অনুযায়ী দেবো। প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা ফাইজারের টিকা দেবো। ডব্লিউএইচও বলেছে, যারা অন্যান্য টিকা নিয়েছে তারাও বুস্টার ডোজ হিসেবে ফাইজারের টিকা নিতে পারবে। আমরা শুনেছি মডার্নাও বুস্টার ডোজ হিসেবে দেওয়া যায়। আমাদের স্টকেও মডার্না আছে।
তিনি বলেন, যদি আমরা ৭০ শতাংশ ব্যক্তিদের টিকা দিতে চাই তাহলে আমাদের ২৪ কোটি টিকা লাগবে। এই ৭০ শতাংশ হলো ১২ কোটি মানুষ। ৭০ শতাংশ মানুষকে ২ ডোজ টিকা দিতে আমাদের ১৩ কোটি টিকা লাগবে। মাঠ পর্যায়ে এবং হাতে যে টিকা আছে সেটা হলো ৪ কোটি ৬৩ লাখ। ডিসেম্বর নাগাদ আরও ৬ কোটি ৫৫ লাখ ডোজ টিকা হাতে পাওয়া যাবে। ২০২২ সালের প্রথম কোয়ার্টারে আরও ৯ কোটি ডোজ টিকা আমরা পাব। ৩১ মার্চ নাগাদ সম্ভাব্য প্রাপ্তি ১৬ কোটি ৮৫ লাখ। ৭০ শতাংশ কাভারেজের জন্য এপ্রিলের মধ্যে আমাদের প্রয়োজন হবে ১৩ কোটি ডোজ। তখন আমাদের হাতে থাকবে সাড়ে ১৬ কোটির বেশি। টিকার কোনো ঘাটতি আমাদের হবে না।
আরো পড়ুন:
শুরু হচ্ছে বুস্টার ডোজ ।। পুনঃনিবন্ধনের প্রয়োজন নেই