শিল্প ও বাণিজ্য

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন নতুন উচ্চতায় | ৪,৪০৩ কোটি ডলার


নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: করোনার মধ্যে প্রবাসী আয়ে গতি থাকায় এবং রপ্তানিতে বড় ধস না নামায় বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ৪ হাজার ৪০৩ কোটি ডলারে উঠেছে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে বুধবার দিন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪ হাজার ৪০২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এই রিজার্ভ দিয়ে দেশের কমপক্ষে ৮ মাসের আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা সম্ভব।

রিজার্ভের বেশ কয়েকটি উৎস রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বর্তমানে বড় ভূমিকা রাখছে প্রবাসী আয়। চলতি ফেব্রুয়ারির প্রথম ২৩ দিনে ১৪৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।

এই আয় গত বছরের একই সময়ের ১২৪ কোটি ৬০ লাখ ডলারের চেয়ে ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেশি। প্রবাসী আয় বাড়াতে গত ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ প্রণোদনা দিতে

শুরু করে সরকার। এরপর থেকেই প্রবাসী আয়ে গতি আসে। বিশেষ করে করোনার পরে তাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। তবে সামনের দিনে এই গতি থাকবে কি না, তা নিয়ে সংশয়

আছে। এদিকে পণ্য রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি না থাকলেও পরিস্থিতি খুব হতাশাব্যঞ্জক নয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাস জুলাই-জানুয়ারিতে ২ হাজার ২৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কম।

এককভাবে গত জানুয়ারিতে ৩৪৩ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের মধ্যে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ অনেক বেড়েছে। একইভাবে গত বছরের এপ্রিল ও মে মাস ছাড়া বাকি সময়ে পণ্য রপ্তানিতেও ভালো আয় হয়েছে। আমদানি ব্যয় অবশ্য বেশ কমেছে। এ কারণে রিজার্ভে নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। তবে আমদানি বেড়ে গেলে রিজার্ভ আবার কমতে পারে।

করোনাভাইরাসের মধ্যে গত ১ সেপ্টেম্বর রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার অতিক্রম করে। ৮ অক্টোবর তা আরও বেড়ে ৪ হাজার কোটি ডলারে ওঠে, যা

গতকাল ৪ হাজার ৪০০ কোটি ডলার ছাড়ায়। সংকটে পড়লে এই রিজার্ভ অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে কাজে দেবে এবং আমদানি দায় মেটাতেও তেমন সমস্যায় পড়তে হবে না বলে

মনে করেন ব্যাংকাররা। মূলত, ২০১৪ সাল থেকেই দেশে রিজার্ভের পরিমাণ বেশি বাড়ছে। ওই বছরের ১০ এপ্রিল রিজার্ভ ২ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে তা ২ হাজার ৫০০ কোটি অতিক্রম করে এবং ২০১৬ সালের জুনে রিজার্ভ বেড়ে হয় ৩ হাজার কোটি ডলার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *