শ্রীলংকার বিপক্ষে চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়েও বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে জয় পায়নি বাংলাদেশ। ক্যাচ মিসের মাশুল দিল টাইগাররা। ১৭১ রান করে হেরে যায় ৫ উইকেটে।
ওপেনার লিটন দাসের কল্যাণে দুইবার ১৪ ও ২৩ রানে ক্যাচ তুলে দিয়ে লাইফ পাওয়া ভানুকা রাজাপক্ষ শেষ পর্যন্ত খেলেন ৩১ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংস।
১৪ রানে আফিফের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে প্রথম আর ২৩ রানে মোস্তাফিজের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে দ্বিতীয় দফায় লিটনের কল্যাণে লাইফ পান রাজাপক্ষ।
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ মিস করায় ম্যাচে আর ফেরা হয়নি বাংলাদেশের। টাইগারদের এই দুর্বলতাকে পুঁজি করে দাপটের সঙ্গেই ম্যাচ জয় নিশ্চিত করে শ্রীলংকা।
রোববার আরব আমিরাতের শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে মোহাম্মদ নাঈম ও মুশফিকুর রহিমের জোড়া ফিফটিতে ভর করে ১৭১/৪ রান করে বাংলাদেশ।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৭ বল হাতে রেখেই ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে শ্রীলংকা। দলের জয়ে ৪৯ বলে সর্বোচ্চ ৮০ রান করেন চারিথ আসালঙ্কা। দুইবার লাইফ পেয়ে ৩১ বলে ৫৩ রান করেন ভানুকা রাজাপক্ষ।
এদিন টস জিতে বাংলাদেশ দলকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় শ্রীলংকা ক্রিকেট দল।
প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে উদ্বোধনীতে মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে ৪০ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফিরেন লিটন দাস। ৫.৫ ওভারে ১৬ বলে দুটি চারের সাহায্যে ১৬ রান করে ফেরেন এ ওপেনার।
তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৭ বলে দুটি চারের সাহায্যে ১০ রান করে দলীয় ৫৬ রানে ফেরেন সাকিব। করুনারত্নের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এ অলরাউন্ডার।
এরপর নাঈমের সঙ্গে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে তাড়া গড়েন ৭৩ রানের জুটি। ৫২ বলে ৬২ রান করে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তার বিদায়ে ১৬.১ ওভারে ১২৯ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
ইনিংসের শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে যাওয়া মুশফিকু রহিম ৩২ বলে চারটি বাউন্ডারি আর দুটি ছক্কায় ফিফটি পূর্ণ করেন। মুশফিকের ফিফটির পর রান আউট হয়ে ফেরেন আফিফ হোসেন। ১৮.৩ ওভারে ১৫০ রানে ফেরেন তিনি।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন মুশফিকুর রহিম। ৩৭ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৭ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন মুশফিক। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে ১৭১ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ দল।
১৭২ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারাল শ্রীলংকা। ইনিংসের চতুর্থ বলে নাসুম আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লংকান তারকা ওপেনার কুশাল পেরেরা। দলীয় ২ রানে ফেরেন তিনি।
এরপর চারিথ আসালঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে ৬৯ রানের জুটি গড়েন পাথুম নিসাঙ্কা। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা নিসাঙ্কা ও আসালঙ্কার মধ্যকার জুটির বিচ্ছেদ ঘটান সাকিব আল হাসান। এই অফস্পিনারের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২১ বলে ২৪ রান করেন পাথুম নিসাঙ্কা।
চার নম্বর পজিশনে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় বলেই বোল্ড হয়ে ফেরেন আভিস্কা ফার্নান্দো। তাকে রানের খাতা খুলতে দেননি সাকিব।
সাকিবের পর লংকান শিবিরে আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন ওয়ানেন্দু হাসারঙ্গা ডি সিলভা। তার বিদায়ের মধ্য দিয়ে ৯.৪ ওভারে ৭৯ রানে ৪ উইকেট হারায় শ্রীলংকা।
এরপর আফিফ হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান দুইবার ভানুকা রাজাপক্ষকে আউট করার সুযোগ তৈরি করেন। কিন্তু লিটন দাস দুইবার ক্যাচ ফেলে দেওয়ায় চারিথ আসালঙ্কা-রাজাপক্ষ দলকে জয়ের দুয়ারে নিয়ে যান।
শেষ দিকে শ্রীলংকার জয়ের জন্য ১০ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ৭ রান। খেলার এমন সময় নাসুম আহমেদের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন ভানুকা রাজাপক্ষ। তার আগে মাত্র ৩১ বলে তিন চার ও তিন ছক্কায় খেলেন ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংস। তার এমন নান্দনিক ইনিংসে ভর করেই জয় পায় শ্রীলংকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৭১/৪ রান ( মোহাম্মদ নাঈম ৬২, মুশফিকুর রহিম ৫৭, লিটন দাস ১৬, সাকিব আল হাসান ১০, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১০, আফিফ হোসেন ৭)।