খোকন কুমার রায়:
আমাদের শ্রদ্ধেয় কৃষকগণ সর্বদা দুশ্চিন্তায় থাকেন সময়মতো ধান কাটা নিয়ে। এই যেমন- প্রবল বর্ষণ, ঝড় কিংবা পাহাড়ী হাতীর পাল এসে নষ্ট করে দিতে পারে এতো কষ্টের ফসল। অনেক সময় শ্রমিক পাওয়া না পাওয়া নিয়েও দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। এবার যোগ হলো নতুন দুশ্চিন্তা- ‘ফটোশ্যুট শ্রমিক’ (ভিআইপি), যারা স্বেচ্ছাশ্রমে বিশাল গাড়িবহর ও প্রটোকল নিয়ে কাস্তে হাতে ক্ষেতে নেমে পড়েছেন ধান কাটতে আর ক্যামেরা হাতে উনাদের ঘিরে আছেন আলোকচিত্রীরা ।
অবাক হলেও সত্যি, এমন কিছু ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে বিষয়গুলো নিয়ে। আমরা তো মজা পাচ্ছি কিন্তু যে কৃষকের কাঁচা ধান ক্ষেত কাটা হয়েছে কিংবা পাকা ক্ষেত সঠিক পদ্ধতিতে কাটা হয় নাই, তার কী অবস্থা? কয়েকজনকে রীতিমত গালিগালাজ করতে শুনলাম এসব ভিআইপি শ্রমিকদের।
বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্যোগময় সময়ে অতীতেও আমরা দেখেছি আত্মপ্রচারকামী ও অতি উৎসাহী এ সমস্ত কিছু সংখ্যক লোকদের, যারা ব্যাপক হাস্যরসাত্মক ও ব্যাঙ্গাত্মক খবরের জন্ম দিয়েছেন তাদের কার্যক্রম দ্বারা।
যাহোক, দুর্যোগ, দুঃসময়েও আমাদের বিনোদন দরকার হয়, হাসির খোরাকিও লাগে। তাই উনারা মনে হয় সেই মহান দায়িত্বটি পালন করে যাচ্ছেন।
উনাদের কার্যক্রমে মনে হয়, রাজনীতির জন্যও পণ্যের মতো প্রচার দরকার, ভালো কাজগুলো জনগণকে দেখানো দরকার। আর হাস্যরসাত্মক কাজগুলোই হলো ভালো কর্মের নমুনা।
যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে এই দুঃসময়ে দরিদ্র কৃষকদের ধান সঠিক পদ্ধতিতে কেটে দিয়ে বাহবা কুড়িয়েছেন, সেখানে গুটিকয়েকজনের এহেন কার্যক্রম কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
কাজেই আসুন, ফটোশ্যুটের জন্য হাস্যকর ভালো কাজ না করে জনগণের জন্য প্রকৃত কল্যাণকর কাজ করি। তাতে দেশ-জাতি উপকৃত হবে এবং অন্যরাও উৎসাহীত হবেন।
তাই চলুন, আত্মপ্রচারের রাজনীতি হতে আমরা বেরিয়ে আসি এবং কারো ক্ষতির কারণ যেন না হই। শুভ কামনা।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।