খোকন কুমার রায়:
বর্তমান সংকটে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই ত্রাণ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হয়েছেন। সকলকে সাধুবাদ জানাই।
সাধারণত আমরা বন্যা, খরা, বা ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগে নির্দিষ্ট অঞ্চল ভিত্তিক ত্রাণ হিসেবে চাল, ডাল, আলু প্রভৃতি খাবার বিতরণে অভ্যস্ত যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলমান থাকে। কিন্তু বর্তমানে ত্রাণ বিতরণ এলাকা সমগ্র দেশ এবং এ কার্যক্রম কতদিন চালু রাখতে হবে তা সবার অজানা। সেইসঙ্গে, সারাদেশে দীর্ঘ মেয়াদী ত্রাণ বিতরণের পূর্ব অভিজ্ঞতা আমাদের নেই।
ত্রাণে অপঁচনশীল বিভিন্ন দ্রব্যাদি যেমন- চাল, ডাল, আলু, আটা, প্রভৃতি রয়েছে, তেমনি পঁচনশীল বিভিন্ন সব্জি, ফলমূল, মাছ, মাংস প্রভৃতিও অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
বর্তমান লকডাউনে যাতায়াত ও যানবাহন সীমিত এবং পণ্য পরিবহনেও সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন এলাকায় শাক-সব্জি, ফলমূল, মাছ-মাংস, প্রভৃতি আগের মতো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা যাচ্ছে না এবং দ্রুত পঁচনশীল কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এ অবস্থায় আমরা যদি অঞ্চল ভিত্তিক এসব পঁচনশীল কৃষিপণ্য ন্যায্য মূল্যে ক্রয় করে ঐ অঞ্চলেই ত্রাণ সহায়তায় ব্যবহার করি তাহলে কৃষকগণ যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি দরিদ্র জনগণও উপকৃত হবেন এবং পঁচনশীল খাদ্যদ্রব্যের উৎকৃষ্ট ব্যবহার নিশ্চিত হবে।
কাজেই প্রত্যেক এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এ সমস্ত পঁচনশীল খাদ্যদ্রব্যাদি ক্রয় করে ঐ এলাকাতেই ত্রাণ বিতরণে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে চাল, ডালের ওপর চাপ কমবে, দরিদ্র মানুষ উপকৃত হবে, কেউ অসাধু উপায়ে এসব দ্রব্যাদি গুদামজাত করে সংরক্ষণ করতে পারবে না। সর্বোপরি দিশেহারা কৃষকগণ ন্যায্যমূল্য পেয়ে উপকৃত হবেন এবং এটাই হবে তাদের জন্য উৎকৃষ্ট প্রণোদনা।
কাজেই আসুন, আমরা সবাই অপঁচনশীল খাদ্যদ্রব্যের পাশাপাশি নিজ নিজ এলাকা থেকে পঁচনশীল খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করে ঐ এলাকাতেই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে গর্বিত অংশীদার হই।
লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক, ধূমকেতু.কম।