লাইফস্টাইল প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: এলোভেরা বা ঘৃতকুমারী খুবই উপকারী একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এটি দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মতো হয়ে থাকে। অনেক গুণের অধিকারী এই ভেষজটির মধ্যে রয়েছে ২০ রকমের খনিজ। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, কপার, ম্যাংগানিজ, এনজাইম, মিনারেল এবং কোলাইনসহ বহু উপাদান। এছাড়াও এতে ভিটামিন A, B1, B2, B6, B12, C এবং E রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক এলোভেরার নানা উপকারিতাগুলো সম্পর্কে।

০১। হজম শক্তি বৃদ্ধি: হজম শক্তি বৃদ্ধিতে চমৎকার কাজ করে এলোভেরা। এক্ষেত্রে এলোভেরার জুস খুব ভালো কাজ করে। পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করে থাকে এলোভেরা যার ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। এলোভেরা কোষ্টকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া উভয় ক্ষেত্রেই কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম। এসিডিটির ক্ষেত্রেও খুবই উপকারী এলোভেরা। এটি পেট ঠান্ডা রাখে। তাছাড়া এলোভেরা পান করলে কৃমি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না বা থাকলেও দূর হয়ে যায়।

০২। শরীর বিষমুক্ত করে: বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের দেহে টক্সিন প্রবেশ করে জমতে থাকে। শরীরে জমে থাকা টক্সিন বা বিষ লিভার থেকে অপসারণ করে থাকে এলোভেরা। এলোভেরার বিদ্যমান বিভিন্ন শক্তিশালী উপাদান এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করে শরীর রাখে দূষণমুক্ত এবং বিষমুক্ত। তাই এলোভেরা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

https://www.youtube.com/watch?v=RBTAhAFEAsw

০৩। প্রদাহ ও ব্যথা কমায়: শরীরে নানা ধরনের ব্যথা প্রদাহ দূর করতে খুবই পারদর্শী ঘৃতকুমারী। এতে এমন সব উপাদান রয়েছে যা দেহে প্রদাহ তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করে এবং প্রদাহ হয়ে গেলে তা কমিয়ে আনে। ঘৃতকুমারীর এই সব গুণ হাত ও পায়ের জয়েন্ট পেইন দূর করে এবং গিঁটের ব্যথা কমাতেও বিশেষ সাহায্য করে।

০৪। ত্বকের যত্নে: ত্বকের যত্নে ও রূপচর্চায় প্রায় ৫,০০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এলোভেরা। এখনো আধুনিক প্রসাধনী তৈরির অন্যতম কাঁচামাল এলোভেরা। এলোভেরা ত্বককে করে মসৃণ ও লাবণ্যময়। ব্রণ, রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বককে পরিষ্কার ও ফ্রেশ করে থাকে এটি। রূপচর্চায় এই উপকারী ভেষজটির জুড়ি মেলা ভার।

০৫ । চুলের যত্নে: চুলের যত্নে খুবই উপকারী এলোভেরা। এতে রয়েছে ভিটামিন-ই বিটা কেরোটিন। এলোভেরা নিয়মিত চুলে ব্যবহার করলে চুল পড়া রোধ হয়। এটি চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে চুলকে করে তুলে ঝলমলে কালো ও সিল্কি। যাদের খুশকির সমস্যা আছে তাদের জন্যও খুব উপকারী এলোভেরা। এটি খুশকি দূর করে স্কাল্প কে রাখে একদম পরিষ্কার।

০৬। তারুণ্য ধরে রাখে: আজকাল তারুণ্য ধরে রাখতে মরিয়া সবাই। তারুণ্য ধরে রাখতে মাঝে মাঝেই পান করতে পারেন এলোভেরার জুস এবং ব্যবহার করতে পারেন ত্বকে। হজম শক্তি বৃদ্ধি ও শরীর বিষমুক্ত রাখার মাধ্যমে এটি শরীরের তারুণ্য ও যৌবন ধরে রাখে। ত্বকের বলিরেখা দূর করে এন্টি-এজিং হিসেবে কাজ করে থাকে।

০৭। ক্লান্তি দূর করে: প্রচন্ড গরমে ক্লান্ত হয়ে পড়লে এক গ্লাস এলোভেরার জুস পান করতে পারেন লেবুর সাথে। এতে শরীর ঠান্ডা হবে এবং ক্লান্তি দূর হবে নিমিষেই এবং শরীর হয়ে উঠবে চাঙ্গা।

০৮। শরীরের ফিটনেস: এলোভেরা শরীরের ফিটনেস ভালো রাখে। এর মধ্যে বিদ্যমান বিভিন্ন উপকারী উপাদান শরীরে শক্তি জোগায় এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকে। শরীর মুটিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে এলোভেরা। শরীরের এনার্জি বৃদ্ধি করে ও অবসাদ দূর করে থাকে । পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধিতেও এর ভালো ভূমিকা রয়েছে। লিভার এবং কিডনির কার্যক্ষমতাও  ঠিক রাখে।

অ্যালোভেরার অনেক সুবিধা রয়েছে। তবে এই সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে:

• অ্যালোভেরা লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। যদি কোনও ব্যক্তি অ্যালোভেরার রস পান করতে চান তবে প্রথমে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন কারণ এর রস ক্ষতিকারকও হতে পারে।

• গর্ভবতী মহিলাদের এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের অ্যালোভেরার রস ব্যবহার এড়ানো উচিত। কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে।

• অ্যালোভেরার রস বেশি পরিমাণে খাবেন না। এটি কেবল ডোজ হিসেবে গ্রহণ করুন, অন্যথায় ডায়রিয়া হতে পারে। • অ্যালোভেরা ব্যবহারের কারণে যদি কোনও সমস্যা হয় তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে এর ব্যবহার বন্ধ করুন।

আরো পড়ুন:

জেনে নিন এক কাপ মেথি চায়ের উপকারিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *