স্বাস্থ্য

তরুণদের হৃদরোগ ঝুঁকি কমাতে ট্রান্সফ্যাট মুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: বাংলাদেশে তরুণদের মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি ৫ জন তরুণের মধ্যে ১ জন হৃদরোগ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। খাদ্যে উচ্চমাত্রার শিল্পোৎপাদিত ট্রান্সফ্যাট এর অন্যতম কারণ। অবিলম্বে ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা চূড়ান্ত করা না গেলে ট্রান্সফাটঘটিত হৃদরোগ ঝুঁকি আশংকাজনক হারে বাড়তে থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষ্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত “ট্রান্সফ্যাট মুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে যুব সমাজের ভূমিকা” শীর্ষক ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে বক্তারা এমন আশংকার কথা তুলে ধরেন।

ওয়েবিনারে জানানো হয়, ট্রান্স ফ্যাটি এসিড (টিএফএ) বা ট্রান্সফ্যাট স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর একটি খাদ্য উপাদান। ডালডা বা বনস্পতি ঘি এবং এটি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন খাবার, ফাস্টফুড ও বেকারি পণ্যে ট্রান্সফ্যাট থাকে। এছাড়াও ভাজা পোড়া খাবার তৈরিতে একই তেল বারবার ব্যবহার করলে ট্রান্সফ্যাট তৈরি হয়, যা হৃদরোগ ও হৃদরোগজনিত অকাল মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউট এর গবেষকগণ ঢাকার ডালডা নমুনার ৯২ শতাংশে ডব্লিউএইচও সুপারিশকৃত ২% মাত্রার চেয়ে বেশি ট্রান্সফ্যাট (ট্রান্স ফ্যাটি এসিড) পেয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০২৩ সালের মধ্যে বিশ্বের খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে ট্রান্সফ্যাট নির্মূলের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

ওয়েবিনারে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এর ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৬ হাজার মানুষ ট্রান্সফ্যাটঘটিত হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করেন, যার একটি অংশ তরুণ। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নাজের হোসেন বলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ “খাদ্যদ্রব্যে ট্রান্স ফ্যাটি এসিড নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা, ২০২১” চূড়ান্তকরণে কাজ করছে এবং এজন্য তাদের ধন্যবাদ। তবে অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। এই প্রবিধানমালা দ্রুত চূড়ান্ত করতে হবে।

বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড নিউট্রেশন অ্যাসোসিয়েশন (বাফনা) এর সাধারণ সম্পাদক বিপুল বিশ্বাস আপন বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান জনগোষ্ঠির প্রায় অর্ধেকই তরুণ। ট্রান্সফ্যাট মুক্ত খাদ্য নিশ্চিত করতে না পারলে হৃদরোগের প্রকোপ থেকে তরুণদের সুরক্ষা প্রদান করা যাবে না বলে জানান বিপুল বিশ্বাস আপন।

ওয়েবিনারে মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ট্রান্স ফ্যাট প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর ডা. শেখ মোহাম্মদ মাহবুবুস সোবহান এবং প্রজ্ঞা’র ট্রান্সফ্যাট বিষয়ক প্রকল্প সমন্বয়ক মাহমুদ আল ইসলাম শিহাব। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ নেয়া তরুণদের সাথে ওয়েবিনারে আরো উপস্থিত ছিলেন মো. রূহুল কুদ্দুস (জিএইচএআই), এবিএম জুবায়ের (প্রজ্ঞা)সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *