নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার শর্তে আগামী ১০ অক্টোবর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দিয়ে ১৬ অক্টোবর থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর প্রস্তাব করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির জরুরি সভায় এ প্রস্তাব করা হয়।
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আগামীকাল (বুধবার) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভা রয়েছে। সেখানে প্রভোস্ট কমিটির প্রস্তাবের ভিত্তিতে আলোচনা শেষে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তবে হল খোলার বিষয়টি প্রভোস্টদের সিদ্ধান্তই বিবেচনায় নেওয়া হবে।”
করোনাভাইরাস মহামারীকালে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রথম ধাপে অগ্রাধিকারভিত্তিতে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা হলে উঠতে শুরু করে।
দীর্ঘ বিরতির পর তাদের আগমনে ক্যাম্পাস প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে। নিজেদের ‘প্রাণের ঠিকানায়’ ফিরে উচ্ছ্বাস আর আনন্দে মুখর হয়ে উঠেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে হলের গেইট খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের ফুল আর চকলেট দিয়ে বরণ করে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রথমবর্ষের স্মৃতি জাগিয়ে দেওয়া এমন অভ্যর্থনাকে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নতুন অধ্যায়ের শুরু বলেও মনে হয়েছে শিক্ষার্থীদের অনেকের কাছে।
আগে বলা হয়েছিল স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের এসব শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হলে দ্বিতীয় ধাপে স্নাতক প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে উঠানো হবে।
প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আবদুল বাছির বলেন, ইতোমধ্যে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। কোভিড পরিস্থিরি উন্নতি ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন গ্রহণের আশাব্যঞ্জক সাড়া পাওয়ায় প্রভোস্ট কমিটি আগামী ১০ অক্টোবর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো সব বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থীরা আগামী ১০ অক্টোবর থেকে নিজ নিজ হলে উঠতে পারবে।
উল্লিখিত বর্ষের যেসকল শিক্ষার্থী অন্তত ‘কোভিড-১৯’-এর প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে, তারা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে টিকা গ্রহণের কার্ড বা সনদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ পরিচয়পত্র সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখিয়ে নিজ নিজ হলে সকাল ৮টা থেকে প্রবেশ করতে পারবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকার কারণে যে শিক্ষার্থী টিকা নিতে পারছেন না, তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির জন্য আগামী ৭ অক্টোবর থেকে টিএসসিতে ভোটার রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, “যেসকল শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তারা এই কেন্দ্র থেকে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দ্রুত এনআইডি করতে পারবে। সকল বর্ষের শিক্ষার্থীকে শতভাগ টিকার আওতায় এনে অতিদ্রুত সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা হবে।”