স্বাস্থ্য

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: গত দেড় মাস ধরে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি অব্যাহত রয়েছে। করোনা ভাইরাস ও ডেঙ্গুর বেশ কিছু উপসর্গের  মিল থাকায় বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনা মহামারি সামাল দিতেই হিমশিম খাচ্ছে পুরো স্বাস্থ্য সেক্টর। ২০১৯ সালে একই অবস্থা সৃষ্টি করেছিল ডেঙ্গু। করোনা ভাইরাস রক্তে যে সমস্যা তৈরি করে তেমন ডেঙ্গুও রক্তে একই রকম সমস্যা তৈরি করে। আর একই ব্যক্তি করোনা ও ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে ওই রোগীর মৃত্যুঝুঁকি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তাই করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

১৩ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সী অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিট (এমআইএস)-এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ কামরুল কিবরিয়া ধূমকেতু ডটকমকে জানান, দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি রোগী ৯৫২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে সর্বমোট ভর্তি রোগী ৮৮৪ জন। অন্যান্য বিভাগে বর্তমানে সর্বমোট ভর্তি রোগী ৬৮ জন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ২৪ টি মৃত্যুর তথ্য প্রেরিত হয়েছে। তবে আইইডিসিআর এখনো কোনো মৃত্যুর পর্যালোচনা সমাপ্ত করেনি এবং কোনো মৃত্যু ডেঙ্গুজনিত বলে নিশ্চিত করেনি বলে জানান মোহাম্মদ কামরুল কিবরিয়া।

তিনি আরো জানান, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত শনাক্তকৃত মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৫,৬৪৫ জন এবং  সর্বমোট ছাড়প্রাপ্ত রোগীর সংখ্যা ৪৬৬৯ জন।

এদিকে, গত ২০১৯ সালের দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়ে হাজির হয়েছিল ডেঙ্গু। সরকারী হিসেবেই ওই বছর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। মারা গেছেন ২৬৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, ২০০০ সালে ৫৫৫১ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ৯৩ জন,  ২০০১ সালে ২৪৩২জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ৪৪ জন, ২০০২ সালে ৬২৩২ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ৫৮ জন, ২০০৩ সালে ৪৮৬ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ১০ জন, ২০০৪ সালে ৩৪৩৪ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ১৩ জন, ২০০৫ সালে আক্রান্ত ১০৪৮ জন ও মৃত্যু ৪ জন, ২০০৬ সালে আক্রান্ত  ২২০০জন ও মৃত্যু ঘটে ১১ জনের।

এভাবে ২০০৭ সালে ৪৬৬ জন, ২০০৮ সালে ১১৫৩ জন, ২০০৯ সালে ৪৭৪ জন এবং ২০১০ সালে ৪০৯  আক্রান্ত হলেও ওই চারটি বছরে কেউ মারা যায়নি। আর ২০১১ সালে ১৩৫৯ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ৬ জন, ২০১২ সালে ৬৭১ জন আক্রান্ত  ও মৃত্যু ১ জন, ২০১৩ সালে ১৭৫৯জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ২ জন,  ২০১৪ সালে ৩৭৫ জন আক্রান্ত, ২০১৫ সালে ৩১৬২ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ৬ জন, ২০১৬ সালে ৬০৬০ জন আক্রান্ত ও মৃত্যু ১৪ জন, ২০১৭ সালে আক্রান্ত ২৭৬৯ ও মৃত্যু ৮ জন এবং ২০১৮ সালে ১০ হাজার ১৪৮ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যু ঘটে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর আরও জানায়, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে ৩ জন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন এবং জুলাইয়ে ২২৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করে আইইডিসিআর। আর আগস্ট মাসে ১৩ তারিখ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯৮৭ জনে।

কোভিড ডেঙ্গু:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, ডেঙ্গু ও করোনা দুটিতেই আক্রান্ত রোগী এখন অনেক পাওয়া যাচ্ছে। জ্বর হলেই প্রথমে করোনা ও পরে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে উদাসিনতা ও ঘামখেয়ালিপনা করলে মৃত্যুর আশংকা রয়েছে। তিনি বলেন, করোনা ও ডেঙ্গু এই দুটির উপসর্গ প্রায় একই, তবে কিছু কিছু পার্থক্য আছে। করোনার উপসর্গ হলো জ্বর, সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, শরীরে ব্যথা ও ঘ্রাণ না পাওয়া।

আর ডেঙ্গুর লক্ষণ হলো, ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রি শরীর কাপানো জ্বর, চোখের পাতার পেছনে ব্যথা ও ব্যাপক পেইন এবং গিড়ায় গিড়ায় ব্যথা। শরীরে র‌্যাশও উঠতে পারে। কোনো কোনো ডেঙ্গু রোগী আক্রান্ত হওয়ার চার দিন পর প্লাটিলেট কমে গিয়ে নাক, দাঁত, পায়খানা ও বমির মাধ্যমে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

করোনা রোগীদের এন্টিবায়োটিকসহ বিভিন্ন ওষুধ চিকিৎসা সেবায় প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু ডেঙ্গু রোগীর শুধুমাত্র প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে হবে, এসপিরিন জাতীয় ওষুধসহ কোনো ধরনের ব্যাথানাশক ওষুধ সেবন করা যাবে না।  তবে সেকেন্ডারি ইনফেকশন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে।

এছাড়া ডেঙ্গু রোগীর বেশি করে ওরস্যালাইন, ডাব ও অতিরিক্ত পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। 

অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ আরও বলেন, এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু জ্বর হয়। এডিস মশা দিনে কামড়ায়। শীত না আসা পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব থাকতে পারে। তাই আমাদের সচেতন হতে হবে। জমে থাকার বৃষ্টির পানিতে এডিস মশার বংশ বিস্তার হয়। ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধ করার জন্য একমাত্র উপায় হচ্ছে এডিস মশার বংশ বিস্তার রোধ করা। এছাড়া এডিস মশা যাতে না কামড়ায় সেজন্য দিনের বেলায় ফুলহাতা শার্ট পরতে হবে। ঘরের ভিতরে জমাট বাধা পানি পরিস্কার করতে হবে। ঘরে কিংবা তার আশপাশে স্বচ্ছ পানি বেশিদিন রাখা যাবে না। 

আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এএসএম আলমগীর বলেন, ডেঙ্গু ও করোনার উপসর্গ প্রায় একই। তবে কিছু পার্থক্য আছে। দুইটার ক্ষেত্রেই জ্বর, গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি এবং স্বাদ না থাকা হতে পারে। করোনার ক্ষেত্রে এসব লক্ষণের সাথে নাকে ঘ্রাণ পায় না এবং কারো কারো পাতলা পায়খানা হয়। এছাড়া করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হতে পারে, যেটি ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে হয় না।

ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে চার-পাঁচ দিন পরে শরীরে লাল অ্যালার্জির মতো র‌্যাশ হতে পারে। তখন রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা কমে যেতে পারে। তিনি বলেন, একজন রোগীর ডেঙ্গু ও করোনা এক সঙ্গে হচ্ছে। তাই জ্বর হলেই করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। নিজের জীবন রক্ষার স্বার্থে দুটি পরীক্ষা করাতে হবে।

করোনা ও ডেঙ্গু উপসর্গ বোঝার উপায় কী?

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট আইইডিসিআরের প্রধান ডা. তাহমিনা শিরিন বলছেন, “এই দুটো রোগেরই উপসর্গে কিছু মিল রয়েছে। বিশেষ করে আক্রান্ত হওয়ার শুরুর দিকে। কিছুদিন আগেও জ্বর, মাথা ব্যথা, গলা ব্যথা, শরীর ব্যথা হলেই আমরা বলতাম কোভিড টেস্ট করেন। আমরা এখন যেটা করছি, এসব উপসর্গ দেখলে করোনা এবং ডেঙ্গু দুটোর জন্যই পরীক্ষা করাতে বলছি।”

ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে যেসব উপসর্গ ডেঙ্গুর থেকে আলাদা সেগুলো হচ্ছে, ঘ্রাণ ও স্বাদ চলে যাওয়া, পাতলা পায়খানা, ফুসফুস আক্রান্ত হওয়া, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। অন্যদিকে ডেঙ্গুর উপসর্গে পার্থক্যের একটি যেমন চোখের পেছনে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়া। ডেঙ্গু গুরুতর হলে রক্তে প্লাটিলেট কমে যায়, চোখের কোনা, দাঁতের মাড়ি বা নাক থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। পেটের ভেতরে রক্তক্ষরণ হলে মল কালো হতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে হঠাৎ মাসিক হয়ে যেতে পারে বা মাসিকের সময় বেশি রক্ত যেতে পারে বলেন ডা. তাহমিনা শিরিন।

দুটোই একসাথে হলে যে ধরনের জটিলতা হতে পারে দুটি রোগেরই আলাদা শারীরিক জটিলতা রয়েছে।

কিন্তু দুটি রোগে একসাথে আক্রান্ত হলে কী ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রধান ভাইরোলজিস্ট ডা. সাবেরা গুলনাহার জানান, ডেঙ্গুর চারটি ধরন রয়েছে। “প্রথম ধরনে আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীদের তেমন একটা সমস্যা হয় না। তাদের শুধু জ্বর থাকে। এর পরেরগুলো হলেই লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং তা কখনো কখনো জটিল রূপ নেয়, যেমন রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যেতে পারে, রক্তক্ষরণ হতে পারে। ডেঙ্গু ও কোভিডে একসাথে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে ডা. গুলনাহার বলছেন, “যদি ১ নম্বর ধরনের ডেঙ্গুর পরবর্তী ধরনগুলোর মাধ্যমে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এবং একইসাথে কোভিড হয় তাহলে ভয়ের কারণ রয়েছে। কোভিডের কারণে যদি ফুসফুস বেশি আক্রান্ত হয় তাতে রোগীর প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি কমে যাবে। আবার কোভিড রক্তে যে সমস্যা তৈরি করে তেমন ডেঙ্গুও রক্তে একই রকম সমস্যা তৈরি করে। যাকে বলে ভাস্কুলাইটিস। এসব কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যাবে।” এই দুটি রোগের জটিলতা একসাথে দেখা দিলে দুটোর জন্যে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দেয়া হয়। বেশি স্টেরয়েড দেবারও রয়েছে বাড়তি ঝুঁকি।

ভাইরোলজিস্ট ডা. নজরুল ইসলাম বলছেন, “যদি একই সাথে ডেঙ্গুর কারণে রক্তে প্লাটিলেট স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি কমে যায় এবং কোভিডের কারণে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রাও ৯০ এর নিচে নেমে যায় তাহলে বিষয়টি বিপদজনক। তখন একই সাথে প্লাটিলেট দিতে হবে, অক্সিজেন দিতে হবে। চিকিৎসকেরা এর সিদ্ধান্ত নেবেন। আবার করোনাভাইরাসের কারণে যদি ফুসফুস বেশি আক্রান্ত হয়, হৃদযন্ত্রের আর্টারি আক্রান্ত হয় তখন খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়। এমন রোগীদের ফেরানো মুশকিল।

ডা. নজরুল ইসলাম বলছেন, করণীয় নির্ভর করছে রোগের উপসর্গগুলোর মাত্রা কেমন তার উপরে। যদি উপসর্গ কোনটারই খুব বেশি না থাকে তাহলে চিন্তার কিছু নেই। তিনি বলছেন, প্রথম কাজই হচ্ছে কোন উপসর্গ দেখা দিলে এখন কোভিড এবং ডেঙ্গু দুটোর জন্যই আলাদা পরীক্ষা করাতে হবে। কোভিডের ক্ষেত্রে ঘরে অক্সিমিটার দিয়ে দিনে অনেকবার রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা মাপতে হবে। মাত্রা ৯০ এর নিচে নেমে যায় কিনা সেটি খেয়াল করতে হবে। ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা ও রক্তক্ষরণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ডা. ইসলাম বলছেন, ডেঙ্গুর ভাইরাস মনোসাইট নামে রক্তের একটি সেলে বৃদ্ধি লাভ করে অন্যদিকে করোনাভাইরাস শ্বাসতন্ত্রে বৃদ্ধি লাভ করে। ডেঙ্গু কখনো ফুসফুস আক্রান্ত করে না। করোনা ফুসফুসের এপিথিলিয়াল সেলে প্রদাহ তৈরি করে। শরীরের নানা অংশে এই সেলের উপস্থিতি রয়েছে তাই সেখানেও করোনাভাইরাস প্রদাহ সৃষ্টি করতে সক্ষম।

ডা. ইসলাম মনে করেন, “দুটি ভাইরাস দুইভাবে বৃদ্ধি লাভ করে। তাই দুটো একসাথে মিলে কোন নতুন কোন রূপ বা গণ্ডগোল তৈরি করবে না।” তবে তিনি বলছেন, বাংলাদেশে দুটি রোগের একসাথে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নতুন। রোগ দুটি একসাথে হলে সেটি অন্য কোন কিছুতে রূপ নেবে কিনা, বিশেষ কোন অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে কিনা সেনিয়ে এখনো যথেষ্ট গবেষণা নেই। হয়ত আরও কিছুদিন গেলে বিষয়টি বিস্তারিত বোঝা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *