নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, কোরবানি উপলক্ষে ঢাকায় ডিজিটাল পশুর হাট ডিজিটাল দুনিয়ায় বাংলাদেশের আরও একটি মাইল ফলক। কেবল পশু বা প্রাণীই নয় সমস্ত কেনাকাটা অনলাইনে করার এটি একটি পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করবে। সরকারি নথি থেকে ডিজিটাল কমার্স, প্রতিটি ক্ষেত্রে বিরাজমান অবস্থা ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি সারা পৃথিবীতে আজ অতুলনীয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী ক্যাব এর ব্যবস্থাপনায় ৪ জুলাই ঢাকা উত্তর সিটি কপোরেশনের ডিজিটাল কোরবানি পশুর হাটের ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী ডিজিটাল কমার্সকে কোরবানির পশুর হাট পর্যন্ত সম্প্রসারণকে দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে একটি ব্যতিক্রমি ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যখন আমরা ডিজিটাল কমার্স শব্দটি উচ্চারণ করি তখন এটি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। অনেকে মনে করতেন ডিজিটাল কমার্স আবার কী, কমার্স তো কমার্সই। কিন্তু ডিজিটাল কোরবানির হাটের মধ্য দিয়ে দেশে ডিজিটাল বাণিজ্যের একটি নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে । স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় ই-ক্যাব এর উদ্যোগে ডিজিটাল কমার্স সম্প্রসারণে এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
ডিজিটাল কমার্সের স্বপ্নদ্রষ্টা ও ই-ক্যাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমরা অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দেবার মতো অবস্থাতে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশের মানুষ সহজে প্রযুক্তি গ্রহণ করতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে যাদেরকে ভাতা বা উপবৃত্তি দিচ্ছে তাদের অনেকেরই মোবাইল বিষয়েও ধারণা নেই কিন্তু এখন তারা প্রযুক্তিকে সহজেই গ্রহণ করতে শিখেছে। বাংলাদেশের প্রযুক্তি গ্রহণ করার এটি একটি অসাধারণ দৃষ্টান্ত।
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার প্রবর্তক মোস্তাফা জব্বার, ডিজিটাল অবকাঠামো সম্প্রসারণে বাংলাদেশ অভাবনীয় সফলতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দেশের হাওর-বিল-পাহাড়-দ্বীপসহ প্রতিটি ইউনিয়নে ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দিতে সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ এর দিকনির্দেশনায় ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮ভাগ এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্ক এর আওতায় আনা হয়েছে। কোভিডকালে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর চাহিদা বিবেচনা করে দেশের শতভাগ মোবাইল নেটওয়ার্ক ফোর জি নেটওয়ার্কে রূপান্তর করা হয়েছে। দেশের ৫টি অর্থনৈতিক জোনে ফাইভ জি নেটওয়ার্ক স্থাপনের কাজ চলছে। টেলিটক শুরুতে ঢাকা শহরেও ৫জি প্রবর্তন করতে যাচ্ছে। একুশ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি ঘরে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে যাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত থেকে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দীন, আইসিটি বিভাগের সচিব এনএম জিয়াউল আলম বক্তৃতা করেন। ই-ক্যাব সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে এবারের ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করছে ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ডেইরী ফার্ম এসোসিয়েশন। সহযোগিতায় রয়েছে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল, এটুআই-একশপ। আলোচনা সভায় জানানো হয় সারাদেশের বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে গত বছর ২৭ হাজার পশু বিক্রি হয়েছে। এবার লক্ষ্যমাত্রা ১ লক্ষ পশু।