প্রচ্ছদ

ডাকলেই গর্জে ওঠে ৩৮ মণ ওজনের ‘বাদশাহ’

ধূমকেতু ডেস্কঃ বাদশাহ যেন বাড়ির অন্যতম পাহারাদার। অপরিচিত কেউ বাড়িতে ঢুকলেই সে গর্জে ওঠে। ডাকাডাকি করে। তখন বাদশাহকে শান্ত করেন রহিমা বেগম কিংবা তার স্বামী ছাদেকুল ইসলাম। ভালোবেসে এ দম্পতি তাদের এই গরুর নাম দিয়েছেন বাদশা। এটির ওজন প্রায় ৩৮ মণ। আসন্ন কোরবানির ঈদে গরুটিকে বিক্রি করবেন তারা।

রহিমা বেগম ও ছাদেকুল ইসলাম দম্পতির বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার শাহাপুর ছকিমুদ্দিনেরডাঙ্গা গ্রামে। রহিমা বলেন, রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাই। বাড়ি পাহারা দেয় বাদশাহ। অপরিচিত লোক তো দূরের কথা, রাতে একটা বিড়াল কিংবা ইঁদুর বাড়িতে দেখলেও বাদশাহ গর্জে ওঠে। ডাকাডাকি করে। বের হয়ে তখন তার কাছে গেলে শান্ত হয়। তিনি আরও বলেন, ‘বাদশাহর প্রতি মায়া অনেক। কিন্তু করার কিছু নেই। বাদশাহের পেছনে খরচ লাগে বাদশাহর মতোই। প্রতিদিন সবুজ ঘাস ও দানাদারসহ খাবারের জন্য খরচ হয় ৭০০-৮০০ টাকা। এখন তা বহন করা অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাই মায়া ত্যাগ করে বিক্রির চেষ্টায় আছি।’

ছাদেকুল ইসলাম বলেন, তার ছোট খামারে ২০১৮ সালের জুনে বাদশাহর জন্ম হয়। এখন বয়স প্রায় চার বছর। চাল-চলনে আচরণ বাদশাহর মতো হওয়ায় আদর করে তারা গরুটির নাম রাখেন বাদশাহ। এটি ফ্রিজিয়ান জাতের গরু। তিনি বাদশাহকে মোটাতাজাকরণ কোনো ইনজেকশন দেননি কিংবা কোনো ওষুধ খাওয়াননি।

কোরবানির ঈদে বাদশাহকে তিনি বিক্রি করতে চান। দাম হাঁকিয়েছেন ১৪ লাখ টাকা। গরুটি অনেক শান্ত স্বভাবের। এত বড় গরু কোরবানির হাটে তোলা দুষ্কর। তাই বাড়িতে রেখে অনলাইনে বিক্রি করতে চান। কেউ কিনতে চাইলে গরুটি দেশের যেকোনো প্রান্তে নিজে পৌঁছে দিতেও রাজি আছেন।

বর্তমানে এ দম্পতির খামারে গরু আছে ১৫টি। তিনি ও তার স্ত্রী খামার দেখভাল করেন। তাদের দুই ছেলে এক মেয়ে। বড় ছেলে রোকনুজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। অন্য দুই সন্তান স্থানীয় স্কুলে পড়ে।

ছাদেকুল ইসলাম জানান, ১৯৯৮ সালে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বাজার থেকে একটি বকনা গরু কেনেন। সেখান থেকে খামারের শুরু। একসময় খামারে গরু হয়েছিল ৩৭টি। এখন আছে ১৫টি। খামারের আয়ে স্থানীয় পৌরসভা এলাকায় ৮ শতক জায়গা কিনে করেছেন পাকা বাড়ি। আবাদি জমিও কিনেছেন ১ একর ৭৫ শতক।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, ‘খামারি ছাদেকুল নিজ বাড়িতেই বাদশাহকে পুষে বড় করেছেন। গরুটি আমি দেখেছি। ওজন প্রায় ৩৮ মণ। গোটা দেশে এত বড় গরু খুব কম আছে। গরুর আদর্শ খামারি হিসেবে পশু সম্পদ কার্যালয় থেকে ছাদেকুল একাধিকবার পুরস্কার পেয়েছেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *