প্রচ্ছদ

ট্রেন চলে গেলে জাহাজের জন্য উপরে উঠে যাবে রেলপথ!

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: এই সেতু চালু হলে কোনোরকম বাধা ছাড়াই সেতুর নিচ দিয়ে জলযান চলাচল করতে পারবে। সেতুর মাঝে ৬৩ মিটার দীর্ঘ অংশ উল্লম্বভাবে ওঠানামা করতে সক্ষম। এর দু’পাশের অত্যাধুনিক সেন্সর লাগানো রয়েছে। ট্রেন আসার আগেই তা আঁচ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেমে আসবে সেতুর ওই ৬৩ মিটার দীর্ঘ অংশ। ট্রেন চলে গেলে পুনরায় তা উঠে যাবে

ভারতের তামিলনাড়ুর রামনাথপুরম জেলার অন্তর্গত একটি শহর মণ্ডপম। দেশটির মূল ভূখণ্ডের অন্তর্গত এই মণ্ডপম থেকে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার মাঝে অবস্থিত সমুদ্রেঘেরা রামেশ্বরমের পামবান দ্বীপ (এটিও ভারতের অন্তর্গত) পর্যন্ত দীর্ঘ রেলসেতু ‌‘পামবান সেতু’ নামে পরিচিত।

১৯১৪ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি এই সেতুর উদ্বোধন হয়েছিল। সমুদ্রের ওপর গড়ে ওঠা ভারতের প্রথম রেলসেতু ছিল এটি। ২০১০ সালে মুম্বাইয়ে বান্দ্রা-ওরলি সেতু গড়ে ওঠার আগে পর্যন্ত এটিই ছিল ভারতের দীর্ঘতম সেতু।

সমুদ্রের মাঝে জাহাজ পারাপারের জন্য এই সেতুর মাঝ বরাবর কিছুটা অংশ একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারত। জাহাজ পারাপারের পর সেটি আবার জুড়ে গিয়ে রেল চলাচলের লাইন তৈরি করে ফেলতে পারত। ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত এই সেতুটিই তামিলনাড়ুর মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে রামেশ্বরমকে সংযুক্ত রাখার একমাত্র পথ ছিল।

২০১৮ সাল থেকে মেরামতির কারণে সেতুটিতে রেল চলাচল বন্ধ থাকে। ২০১৯ সাল থেকে ফের তাতে রেল চলাচল শুরু হয়।

প্রথম সমুদ্র সেতু, প্রথম দীর্ঘতম সমুদ্র সেতু- একাধিক রেকর্ড রয়েছে এই পামবান সেতুর ঝুলিতে। এবার আরও এক রেকর্ড গড়তে চলেছে পামবান।

উল্লম্বভাবে উঠে যাওয়া ভারতের প্রথম সমুদ্র-সেতু হতে চলেছে এটি। তবে এই সেতুর নাম এবং অবস্থান একই হলেও এতক্ষণ যে পামবান সেতুর কথা বলা হচ্ছিল, সেটি এবং এটি এক নয়। এটি আসলে পুরনো সেতুর পাশে গড়ে ওঠা নতুন একটি রেল সেতু। মণ্ডপম এবং রামেশ্বরমের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলায় এটির নামও ‘পামবান রেল সেতু’।

এই সেতু গড়ার কাজ শেষের পথে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২২ সালের মার্চ মাসের মধ্যেই রেল চলাচল শুরু হবে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতু দিয়ে। আরও বেশি ভার নিতে সক্ষম এই নতুন পামবান রেল সেতু। এর ওপর দিয়ে আরও দ্রুতগতিতে সমুদ্র পারাপার করতে পারবে রেল। সেই সঙ্গে রয়েছে আরও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি।

এই সেতু চালু হলে কোনোরকম বাধা ছাড়াই সেতুর নিচ দিয়ে জলযান চলাচল করতে পারবে। সেতুর মাঝে ৬৩ মিটার দীর্ঘ অংশ উল্লম্বভাবে ওঠানামা করতে সক্ষম। এর দু’পাশের অত্যাধুনিক সেন্সর লাগানো রয়েছে। ট্রেন আসার আগেই তা আঁচ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেমে আসবে সেতুর ওই ৬৩ মিটার দীর্ঘ অংশ। ট্রেন চলে গেলে পুনরায় তা উঠে যাবে। অর্থাৎ, এভাবেও বলা যায়, জাহাজ এলেই উপরে উঠে যাবে রেলপথ।

এই সেতু বানাতে আনুমানিক খরচ হবে ২৫০ কোটি টাকা। পুরনো সেতুর চেয়ে অন্তত তিন মিটার উঁচু হবে এটি। সেইসঙ্গে ডাবল লাইন তৈরি হচ্ছে এর ওপর দিয়ে। অর্থাৎ বিপরীত দিক থেকে দুটি ট্রেন একই সঙ্গে যাতায়াত করতে পারবে।

পুরনো পামবান সেতুটি অনুভূমিকভাবে খুলে যায়। সেটি স্বয়ংক্রিয় ছিল না। কিন্তু এই সেতুটি স্বয়ংক্রিয়। ইলেক্ট্রো-মেক্যানিকাল কন্ট্রোল সিস্টেম রয়েছে এটিতে।

আরো পড়ুন: 

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার আগে ১০ বিলিয়ন ডলার ফেরত চায় ইরান

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *