মাতৃভূমি

টেকসই ভবিষ্যতের জন্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সব অংশীজনের সঙ্গে কাজ করার জন্য বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, পরবর্তী প্রজন্মের টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী সব অংশীজনদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।

শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানে ‘মেজর ইকোনমিক ফোরাম অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লাইমেট’ শীর্ষক সম্মেলন আগেই ধারণ করা ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ফোরামের বিবেচনার জন্য ছয় দফা প্রস্তাব দেন।

প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাস করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে বলেন, জলবায়ু তহবিলের জন্য উন্নত দেশগুলোর বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে এবং অভিযোজন ও প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ বিতরণ করতে হবে।

তৃতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের পাশাপাশি সবচেয়ে কার্যকর জ্বালানি সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

তার চতুর্থ প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে উত্তরণের ক্ষেত্রে, জাতি-রাষ্ট্রগুলোর সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোর হিসাব নেওয়া ও তাদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লোকসান ও ক্ষতির বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত।

প্রধানমন্ত্রী তার পঞ্চম প্রস্তাবে বলেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সব দেশের ভাগ করে নেওয়া দরকার।

তিনি আগামী নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিতব্য কপ২৬ সম্মেলনে দৃঢ় ও তাৎপর্যপূর্ণ ফলাফল কামনা করেন এবং এ লক্ষ্যে সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করার জন্য বিশ্বের প্রধান অর্থনীতির দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা ও খরার প্রভাব ছাড়াও ১১ লাখ রোহিঙ্গা জোরপূর্বক মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ গুরুতর জলবায়ু প্রভাবের সম্মুখীন হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টায় তার সরকার অগ্রণী উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও হালনাগাদ করা এনডিসি জমা দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বাধিক বিস্তৃত অভ্যন্তরীণ সৌরশক্তি কর্মসূচি নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, যা জলবায়ু ঝুঁকি থেকে জলবায়ু সহিষ্ণুতা ও তা থেকে জলবায়ু সমৃদ্ধি পর্যন্ত একটি যাত্রা।

জলবায়ু ঝুঁকি ফোরাম (সিভিএফ) ও ভি-২০’র সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ তুলে ধরা। ঢাকায় গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপ্টেশনের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের মাধ্যমেও বাংলাদেশ সেরা অনুশীলন ভাগ করে নেয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

আরো পড়ুন:

যা আছে প্রধানমন্ত্রীর সফর সূচিতে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *