ঝুলিতে মাত্র পাঁচটি ছবি। তার পর আড়াই বছরের বিরতি। নিজেকে নতুন ভাবে দর্শকের সামনে নিয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিচালক পথিকৃৎ বসু। মাঝের এই দুই বছরে কী শিখলেন পরিচালক?
প্রায় আড়াই বছর পার। ২০১৯ সালে ‘কে তুমি নন্দিনী’র পর বেশ অনেক দিনের বিরতি। নতুন ছবি ‘কাছের মানুষ’ নিয়ে পর্দায় ফিরছেন পরিচালক পথিকৃৎ বসু। এই বিরতি কী শেখাল পরিচালককে? আনন্দবাজার অনলাইনের মুখোমুখি পরিচালক।
প্রশ্ন: প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব তো আপনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। পরিচালক পথিকৃতের নাকি পুনর্জন্ম হয়েছে?
পথিকৃৎ: ইন্ডাস্ট্রিতে এক ধরনের কাজ করলে টাইপকাস্ট করে দেওয়া হয়। সে যে অন্য ধরনের কাজও করতে পারে, সেটা বিশ্বাস করাতেই অনেকটা সময় পার হয়ে যায়। আমি আগে যে বাণিজ্যিক ছবিগুলো তৈরি করেছিলাম, সেগুলো নিয়ে সত্যিই গর্বিত। তবে ‘হরিপদ ব্যান্ডওয়ালা’র বাইরেও যে আমার একটা সত্তা আছে, সেটা বিশ্বাস করাতেই আমার দু’বছর সময় লেগে গেল। সেই সময় দেবদা আমার পাশে ছিল, তাতেই আমি কৃতজ্ঞ।
প্রশ্ন: প্রযোজক থেকে দর্শক— তাঁদের কাছে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করার ক্রমাগত লড়াই কতটা কঠিন?
পথিকৃৎ: খুব, খুব কঠিন। আমি ছবি পাইনি তা কিন্তু নয়। টেলিভিশনে ‘হরিপদ ব্যান্ডওয়ালা’র টিআরপি রেটিং সর্বোচ্চ। কয়েক জন প্রযোজক ফোন করে আমাকে বলেছেন, কেন এই ছবিটার সিক্যুয়েল তৈরি করছি না। কিন্তু আমি জানি এক বার যদি এই ছবির সিক্যুয়েল বানিয়ে ফেলি, তা হলে এই ‘কাছের মানুষ’-এর মতো ছবি তৈরি করতে পারব না।
প্রশ্ন: মাঝের দু’বছর কেমন কাটল?
পথিকৃৎ: এই দু’বছর মারাত্মক কষ্টে গিয়েছে। না বলা খুব কঠিন ছিল। প্রযোজকদের বলেছি, রিমেক ছবি আমি আর করব না। টুকে ছবি তৈরি করব না। সবাইকে সম্মান জানিয়েই বলছি ,তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবি আর সত্যিই করতে চাই না।
প্রশ্ন: রিমেক ছবি তৈরি করলে এক রকম সম্মান, আর একটু অন্য স্বাদের গল্প বললেই কি ইন্ডাস্ট্রিতে মান বেড়ে যায়?
পথিকৃৎ: এই ভাগাভাগিটা এই ভাবে আমি বলতে পারব না। তবে সময় বদলেছে। দর্শক প্রায় সব কিছুই দেখে ফেলেছেন। ‘ওটিটি’ প্ল্যাটফর্মের দৌলতে তেলুগু-মলয়ালম ছবিও এখন অনেকে দেখেন। সেই অনুযায়ী কিছুটা তারতম্য হয়।
প্রশ্ন: এই পুজোয় ‘এসভিএফ’-এর একটি ছবিও মুক্তি পাচ্ছে। এই সংস্থার হাত ধরেই আপনার উত্থান। সরাসরি সংঘর্ষ লাগল বলে মনে হচ্ছে?
পথিকৃৎ: না, কোনও সংঘর্ষ নেই। প্রতিযোগিতা নেই। শ্রীকান্ত (মোহতা, প্রযোজক) আমার খুবই কাছের। ওঁর জন্যই আমার এত কিছু। ২৩ বছর বয়সের একটা নতুন ছেলেকে ভরসা করে ওই লোকটা তিন কোটি টাকা দিয়েছিল। এখানে প্রতিযোগিতা নেই।
প্রশ্ন: আড়াই বছর আগে আপনি কী কী ভুল করেছিলেন বলে আপনার মনে হয়?
পথিকৃৎ: রিমেক ছবি একটা বড় সমস্যা। যা দর্শক আর দেখবেনও না। টিকে থাকার জন্য হয়তো করতে হয়েছিল। সেটাই আর করতে চাই না।
প্রশ্ন: আপনি নাকি আরও এক প্রথম সারির প্রযোজনা সংস্থায় ছবি তৈরি করছেন?
পথিকৃৎ: আপাতত আমি শুধুই ‘কাছের মানুষ’-এর সঙ্গে আছি। আর কিছু না।