বিরোধীদলীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, এক সঙ্গে দেশের সংবিধান রক্ষা এবং দেশবাসীর কল্যাণের জন্য লড়াই করতে হবে।
তবে ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের কয়েক জন নেতার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবে মমতার কাছে শুভেচ্ছা-বার্তা এলেও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এখন পর্যন্ত নীরব রয়েছেন।
অন্যদিকে ভবানীপুর জয়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কংগ্রেসের প্রতি তোপ দেগে লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বিজেপি-বিরোধিতা থেকে সরে এসে অহর্নিশ মমতা ব্যানার্জিকেই আক্রমণ করে গেছে কংগ্রেস এবং বামপন্থীরা।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যে কংগ্রেসের সেই ‘তাঁবেদারি’ ভালো ভাবে নেননি, তা ভোটের ফলে প্রমাণিত। রাজ্য কংগ্রেস অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, ভোট প্রচারে আগাগোড়া তাদের আক্রমণ করে গেছে তৃণমূলও।
এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার ভবানীপুরের ফলাফল প্রকাশের পরে শুভেচ্ছা জানান মমতাকে। মমতা জবাবে লিখেছেন, পাওয়ারজি, আপনার শুভেচ্ছার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। মানুষের কল্যাণের জন্য এক সঙ্গে কাজ করার দিকে তাকিয়ে রয়েছি।
ডিএমকে-র কানিমোঝি এবং স্টালিন দু’জনেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মমতাকে। কানিমোঝি তার নিজের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর একটি ছবি পোস্ট করে টুইট করেছেন, মমতা ব্যানার্জি শুধু তার মুখ্যমন্ত্রিত্বের আসনটি ধরে রাখলেন না, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির আশাকেও উজ্জ্বল করলেন।
জবাবে মমতা বলেছেন, আমরা এক সঙ্গে সর্বদা সংবিধানের মর্যাদা রক্ষার জন্য চেষ্টা করে যাব।
স্টালিনের শুভেচ্ছার উত্তরে মমতা লিখেছেন, ভবানীপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক মানুষের পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেন লিখেছেন, মমতা ব্যানার্জির এই বিপুল জয় গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখার প্রত্যয়কে তুলে ধরেছে। মমতার উত্তর, আপনার এই শব্দগুলো দেশের পবিত্রতা রক্ষার লড়াইয়ে আমাকে শক্তি দিচ্ছে।
বিভিন্ন আঞ্চলিক দলের নেতাদের অভিনন্দনের ঢেউয়ের পাশাপাশি কংগ্রেসের মূলস্রোতের নেতা কমলনাথকে দেখা যায় শুভেচ্ছা পাঠাতে। তিনি ব্যক্তিগত স্তরে মমতার পুরনো বন্ধু। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গেও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
মমতা জবাবে বলেছেন, অনেক ধন্যবাদ। সর্বান্তকরণে এই অভিবাদনে আনন্দ প্রকাশ করছি।
সারা দিনের রাজনৈতিক সংলাপের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট, এই জয়ের পরে বিরোধী জোটের প্রশ্নে কোনোভাবেই কংগ্রেসকে নেতৃত্বের জায়গাটি ছাড়তে চাইবেন না তৃণমূল নেতৃত্ব।
সুদীপের কথায়, এক জন নারী কীভাবে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপানো বিজেপিকে রুখে দিতে পারে, সারা দেশে তার একটিই উদাহরণ তৈরি হয়েছে। মমতা ব্যানার্জিই এখন সব চেয়ে শক্তিশালী বিজেপি-বিরোধী মুখ। সূত্র: আনন্দবাজার।