নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: গ্রাম-বাংলা শীতলপাটির কদর অনেক পুরোনো। এমনকি বিয়ের অনুষ্ঠানেও লাগে কারুকার্যময় রঙিন শীতল পাটি।
নেত্রকোনার হাওর অঞ্চলখ্যাত মোহনগঞ্জ উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের জৈনপুর গ্রামে শীতলপাটি বুননের সঙ্গে জড়িত তিন শতাধিক পরিবারের কয়েক হাজার নারী-পুরুষ।
জৈনপুরের বাহারি শীতলপাটির কদর নেত্রকোনা ছাড়াও ঢাকা, সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দিন দিন বাড়ছে। শত বছর ধরে বংশানুক্রমে শীতলপাটি শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন জৈনপুর গ্রামে কয়েকশ পরিবার। এ পাটি শিল্পের সঙ্গেই জড়িত তাদের জীবন-জীবিকা।
শীতলপাটি কারিগররা জানান, পাটি বুননের প্রধান উপকরণ মুর্তা বা পাটি বেত স্থানীয় বাজার ও বিভিন্ন এলাকা থেকে কিনে আনতে হয়। এই মুর্তা থেকেই বেত তৈরির পর রং দিয়ে রঙিন করে পাটি তৈরি করা হয়।
শীতলপাটির ব্যবসায়ীরা জানান, ছোট-বড় বিভিন্ন পরিমাপের শীতলপাটির দাম আকার ভেদে ৫০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা বিক্রি হয়। বর্ষাকালে ভাটি এলাকায় বিয়ের প্রচলন বেশি হওয়ায় শীতলপাটির বিক্রিও বাড়ে এই সময়ে। লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে শিক্ষার্থীরাও শীতলপাটি বুনে আয় করে থাকে প্রায় পরিবারের ছেলে-মেয়েরা।
তবে শীতলপাটি কারিগররা জানান, বাজারে প্লাস্টিকের পাটি বের হয়েছে। এতে শীতলপাটি শিল্পতে অনেকটা ক্ষতি হয়েছে। কারণ প্লাস্টিকের পাটি শীতলপাটির তুলনায় অনেক কম মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে। ফলে শীতলপাটি কারিগররা আগের মতো লাভ করতে পারছেন না। বর্তমানে একমাত্র যারা শীতলপাটির কদর আর প্রশান্তি বোঝেন, কেবল তারাই শীতলপাটি খোঁজেন এবং কেনেন।
এদিকে, শীতলপাটি শিল্প উন্নয়নে এর কারিগরদের সার্বিক সহায়তা করবে সরকার- এমনটাই প্রত্যাশা এ শিল্পের সঙ্গে জড়িতসহ এলাকাবাসীর।
ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প সংস্থা (বিসিক) নেত্রকোনার উপ-ব্যবস্থাপক মো. আক্রাম হোসেন বলেন, শীতলপাটি কুটির শিল্পের আওতাভুক্ত একটি শিল্প। এটা কারুশিল্পের মধ্যে পরে। আমরা এরইমধ্যে এ শিল্পটিকে ধরে রাখার জন্য জৈনপুর এলাকা পরিশর্দন করেছি। শীতলপাটি কারিগরদের ডাটা বেইজের আওতায় এনে আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে এ শিল্পটিকে ধরে রাখার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করছি।
আরো পড়ুন: