নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম : জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। আগামী কয়েকদিন দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। পাশপাশি ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশের স্থানসমূহের ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। দেশে বৃষ্টিপাতের পানি এবং উজানের পানির সমন্বয়ে বাংলাদেশে দেখা দিতে পারে বন্যা। সম্ভাব্য বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।
সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বুধবার (৩০ জুন) জানায়, ব্রহ্মপুত্র – যমুনা নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাক পারে। অপরদিকে, পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘন্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীসমূহের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদী সুনামগঞ্জে এবং তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তরের গাণিতিক মডেলের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, মেঘালয় ও ত্রিপুরা প্রদেশের স্থানসমূহের ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। ফলে এই সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, উত্তর পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকা এবং দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অববাহিকার প্রধান নদীসমূহের পানি সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূইয়া ধূমকেতু ডটকমকে জানান, বাংলাদেশের পাশাপাশি উজানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর ফলে উজান থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করা ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও পদ্মা অববাহিকায় পানি দ্রুত বাড়ছে। এতে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে দেশের ১০টির বেশি জেলার নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে। সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এই পূর্বাভাস দিয়েছে। বরাবরের মতো এবারও দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যা বেশি বিস্তৃত হতে পারে। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের নিচু এলাকাতেও বন্যা দেখা দিতে পারে। তবে এই বন্যা গত বছরের মতো এত দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা কম।