চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের মানবাধিকার হরণের অভিযোগ করে চীনের নিন্দা জানিয়েছে ৪৩টি দেশ। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের তৃতীয় অধিবেশনের বৈঠকে দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধিরা এক যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা জানান।
যৌথ বিবৃতি পাঠকালে ফ্রান্সের স্থায়ী দূত নিকোলাস ডি রিভিয়ার বলেন, ‘আমরা চীন সরকারের কাছে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিনিধিদের নিয়ে কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়া সরাসরি জিনজিয়াংয়ে পৌঁছার দাবি জানাচ্ছি। সেখানকার উইঘুর জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে আমরা অত্যন্ত শঙ্কিত।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক পুনঃশিক্ষাশিবিরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যেখানে ১০ লাখের বেশি লোককে নির্বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে। আমরা সেখানে ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের খবর পেয়েছি। নিষ্ঠুর নির্যাতন, নিপীড়ন, অমানবিক শাস্তি, জোরপূর্বক বন্ধ্যাত্বকরণ, যৌন সহিংসতা ও শিশুদের জোরপূর্বক বিচ্ছিন্ন করার খবর পাওয়া গেছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার ওপর সেখানে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। চলাফেরা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পাশাপাশি উইঘুর সংস্কৃতির ওপর কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সদস্যদের ওপর ব্যাপক নজরদারি থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, কানাডা, ক্রোয়েশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, এসওয়াতিনি, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, হন্ডুরাস, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইতালি ও জাপান।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী আরো দেশ হলো- তুরস্ক, আলবেনিয়া, লাটভিয়া, লাইবেরিয়া, লিচেনস্টাইন, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মোনাকো, মন্টেনিগ্রো, নাউরু, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, উত্তর মেসিডোনিয়া, নরওয়ে, পালাউ, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, সান মেরিনো, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন ও সুইডেন।
এদিকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীনের রাষ্ট্রদূত। তিনি এসব অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিহিত করে ‘চীনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার ষড়যন্ত্র’ বলেন। জিনজিয়াংয়ের অধিবাসীরা উন্নয়ন উপভোগ করছে এবং জনগণ দেশের অগ্রগতিতে গর্ববোধ করে বলে চীনের রাষ্ট্রদূত রিভিয়ার জানান। সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি।