শম্পা কর, ধূমকেতু ডটকম: শরৎ এলেই বাতাসে উৎসবের গন্ধ ভাসতে থাকে। শরৎকাল আসেই যেন দূর্গা পূজার বার্তা নিয়ে। তার উপর আশ্বিন মাসও এসেছে বেশ কিছুদিন হয়ে গেলো। এবার আশ্বিনেই দেবী দূর্গা আসছেন মর্তলোকে। এই দূর্গা পূজা হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। বড় উৎসবের আয়োজনও বেশ বড়। তাই এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে পূজার প্রস্তুতি। আর চারপাশে পূজার আমেজও ছড়িয়ে পড়েছে। পূজা মানেই ছোট-বড় সবারই চাই নতুন পোশাক। নতুন পোশাক পড়ে অঞ্জলি দেয়ার রীতি বেশ প্রচলিত। অনেকের আবার পূজায় ষষ্ঠী থেকে দশমী প্রতিদিনই চাই নতুন পোশাক। সেই সাথে সব কাছের আত্মীয়দের মধ্যেও চলে নতুন পোশাক দেয়া নেয়া। তাই সব বিপণী বিতানগুলোতেও বাড়তে শুরু করেছে ভীড়। সারা দেশের ছোট-বড় দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় শপিংমল সবগুলোই সেজে উঠেছে রংবেরঙের পোশাকে। পূজা উপলক্ষে বাজারে এসেছে নতুন নতুন ডিজাইন।

অন্যদিকে ডিজিটাল বাজারগুলোও বেশ জমে উঠেছে। অনলাইনে চলছে নানা পোশাকের জোড়তোড় প্রচারণা, সাথে চলছে কেনাকাটাও। অনেক দোকান অনলাইন, অফলাইন দুই ভাবেই বিক্রি করেছে। কোনো কোনো পেইজ দিচ্ছে কাস্টমাইজড সুবিধা। কাপল ড্রেস এবং ফ্যামিলি ড্রেসগুলোর বেশ চাহিদা বেড়েছে। বাবা-মায়ের পোশাকের সাথে মিল রেখে তৈরি করা হচ্ছে বাচ্চাদের পোশাক। অনলাইনে নেয়া হচ্ছে এইসব অর্ডার।  

মোহনা অনলাইন শপিং এর রুবেল জানান- তাদের পূজার মোটিভ নিয়ে কাজ করা কাপল ড্রেসগুলো বেশ চলছে। অনেকে আবার রঙ, ডিজাইন নিজেদের মতো করে করিয়ে নিচ্ছে। এগুলোর দাম ১২৫০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত পড়বে বলেও জানান তিনি।

ইডেন কলেজের ছাত্রী তন্বী বলেন- “ক্যাম্পাস সহজে খুলবে কিনা তার নিশ্চয়তা ছিলো না তাই ঢাকা আসাও ছিল অনিশ্চত। সেই জন্যই অনলাইনে শাড়ী অর্ডার করে দিয়েছিলাম আগেই। তাছাড়া বোনেরা সবাই একই ধরনের শাড়ী পরবো বলে কাস্টমাইজড করে এমন পেইজে অর্ডার দিয়েছি। এমনিতেই করোনার শুরু হওয়ার পর থেকে অনলাইনে কেনাকাটা করতে বেশি কমফোর্ট ফিল করি”।

অনলাইনের আরেক বিক্রেতা রাজর্ষি জানান- তার কাছে সুতি এবং হাফসিল্কের উপর হ্যান্ডপেইন্ট করা শাড়ী, পাঞ্জাবী, ত্রি-পিসের অর্ডার বেশি আসছে। তিনি বাচ্চাদের পোশাকও আর্ডার নিয়ে তৈরি করে দেন। তার কাছে ১২০০-৮০০০ টাকা দামের হ্যান্ডপ্রিন্টের শাড়ি পাওয়া যাবে।

এবারের পূজায় জামদানী, সুতি খেস শাড়ী, টাঙ্গাইল, কাতান সিল্ক, মণিপুরি শাড়ির পাশাপাশি ইন্ডিয়ান বিভিন্ন সিল্কের শাড়িরও চাহিদা রয়েছে। যেগুলোর দাম পড়বে ৭৫০-১০০০০ টাকা। 

‘ঢাকাই জামদানী’ দোকানের এক বিক্রেতা জানান- জামদানী কাজের ত্রি-পিস এবং পাঞ্জাবীরও বেশ চাহিদা আছে। এগুলোর দাম ১১০০-১৫০০ এর মধ্যে।

অন্য দোকান গুলোর পাশাপাশি দেশীয় বড় বড় ফ্যাশান হাউজ এবং বুটিকস হাউজগুলোও নিয়ে এসেছে পূজার নতুন সব কালেকশন। যেগুলো অনলাইন এবং অফলাইনে বিক্রি করছেন তারা। আড়ং, দেশী-দশ, স্বপ্ন পূজা উপলক্ষে নতুন নতুন ডিজাইন নিয়ে এসেছে।

‘আড়ং’ এ মেয়েদের পোশাকের পাশাপাশি ছেলেদের এবং বাচ্চাদেরও নতুন ডিজাইনের পোশাক এসেছে। মেয়েদের সুতি থেকে শুরু করে জামদানী, সিল্ক, তসর, কাতান শাড়ি পাওয়া যাবে। যার দাম পড়বে ১০০০-৯০০০০ টাকা পর্যন্ত। এর সাথে পাওয়া যাবে মেয়েদের পাঞ্জাবী, কুর্তা, থ্রি-পিস যেগুলোর দাম পড়বে ৭০০০-১০০০০ টাকা পর্যন্ত। ছেলেদের জন্য আছে পাঞ্জাবী-পাজামা, শর্টকুর্তা, ফতুয়া, ও বিভিন্ন ধরনের শার্ট যেগুলোর দাম পড়বে ৬৫০-৯০০০ টাকা। মেয়ে বাচ্ছাদের পোশাক হয়েছে ২৫০-৪০০০ টাকার মধ্যে। ছেলে বাচ্চাদের পোশাক পড়বে ২৫০-৩০০০ টাকা। আড়ং এর এক সেলসম্যান জানান- পোশাকের পাশাপাশি তাদের গয়না গুলোও ভালো সেল হচ্ছে। বিশেষ করে কস্টিউম, পার্ল আর সিলভারের গয়নাগুলো। এছাড়াও এখানে ছোট-বড় সবার জুতা পাওয়া যাবে। যেগুলোর দাম পড়বে ১৫০-৩০০০ টাকা।

পূজা উপলক্ষে ‘স্বপ্ন’ এবার এনেছে নিজস্ব ডিজাইনে কাপল ড্রেস। যেগুলোর দাম ১৫০০-২০০০ টাকা।

এছাড়া ‘দেশী-দশ’ এর ফ্যাশন হাউজগুলোও পূজা উপলক্ষে সেজে উঠেছে। এখানে মেয়েদের শাড়ীগুলোর দাম পড়বে ১২০০-১৫০০০ টাকা পর্যন্ত। কুর্তা পড়বে ৭৫০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত, থ্রি-পিস পড়বে ১৮০০-৮০০০ টাকা পর্যন্ত। ছেলেদের পাঞ্জাবী পড়বে ৭০০-৬০০০ টাকা। শার্ট এবং পলো পড়বে ৫৫০-২৫০০ টাকা। মেয়ে বাচ্চার পোশাক পড়বে ৬০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত এবং ছেলে বাচ্চাদের পোশাক পড়বে ৪৫০-২৫০০ টাকা।

তাছাড়া ঢাকার মধ্যে যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, ইস্টার্ন প্লাজা, এলিফ্যান্ট রোড, সীমান্ত, স্কোয়ার, বেনারসি পল্লী, হকার্স, গাউসিয়া, নিউমার্কেট, চাঁদনীচক, চন্দ্রীমা, রাজধানী, বঙ্গবাজারসহ সব শপিং কমপ্লেক্সেই পাওয়া যাবে বিভিন্ন দামের দেশী বিদেশী পোশাক এবং জুতা।

আরো পড়ুন:

ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করুন সহজেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *