প্রচ্ছদ

বায়তুল মোকাররমে জমে উঠেছে ইসলামি বই মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জমে উঠেছে ইসলামিক ফউন্ডেশন আয়োজিত ‘ইসলামি বই মেলা’। বেচা-বিক্রিতেও সন্তুষ্ট স্টল মালিকরা। মেলায় রয়েছে তরুণদের সরব উপস্থিতি। মেলার প্রথম কিছুদিন উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও এখন বেড়েছে। ক্রেতাদের আগ্রহ দেখে বাড়ানো হয়েছে সময়। বর্ধিত সময়ে এসে বিক্রিও বেড়েছে।

শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর বই মেলায় গিয়ে দেখা যায় মানুষের ভিড়। কেউ সেলফি তুলছেন, কেউ আগে থেকেই বই পছন্দ করে এসেছেন, নির্দিষ্ট দোকানে গিয়ে পছন্দের বই কিনছেন। কেউ আবার ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন পছন্দ হলে কিনবেন বলে।

নাজমুল হুদা নামের এক মাদরাসা শিক্ষার্থী এসেছেন বই কিনতে। যাত্রাবাড়ীর একটি কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থী তিনি। নাজমুল বলেন, চার লেখকের চারটা ইসলামি সাহিত্য বই কিনেছি। এগুলো আগে থেকেই পছন্দ করে এসেছিলাম। আরও দুই তিনটা নতুন বই কিনবো। ঘুরে দেখছি, যদি বই পছন্দ হয় তবে কিনবো। মেলা কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত সুন্দর একটা আয়োজন, অথচ তেমন প্রচার-প্রচারণা নেই। মিডিয়াতেও তেমন প্রচার নেই। প্রচার হলে মেলা আরও বেশি জমে উঠতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রাকিব নামের এক স্নাতক শিক্ষার্থী একটি স্টলে দাঁড়িয়ে উল্টেপাল্টে বই দেখছিলেন। তিনি বলেন, এমনিতে ধর্মীয় বই তেমন একটা পড়া হয় না। ইউটিউবে কিছু বক্তার ওয়াজ দেখি। শুধু কোরআন ও হাদিস ছাড়া ঘরে তেমন ধর্মীয় বই নেই। ঘুরে ঘুরে দেখছি, ভালো লাগলে কয়েকটা বই কিনবো।

কী ধরনের বই পছন্দ জানতে চাইলে তিনি বলেন, নবী রাসুলদের জীবনী ও সাহাবিদের অনেক ঘটনা ওয়াজে ও মুরব্বিদের মুখে শুনি। এরকম কয়েকটা বই কিনবো ইচ্ছা আছে।

এবারের মেলায় বই বিক্রিতেও সন্তুষ্ট স্টল মালিকরা। মেলায় ১নং থেকে ৪নং স্টল বরাদ্দ হয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নামেই। ইসলমিক ফাউন্ডেশনের বই বিক্রয় কেন্দ্র ও তথ্যকেন্দ্রের কর্মচারী রুহুল আমীন জানান, এবারের বেচাকেনা সন্তোষজনক। প্রতিদিনই ক্রেতাদের ভিড় থাকছে।

সোলেমানিয়া বুক হাউসের কর্মচারী ইয়াসিন বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বেচাকেনা ভালো। স্টলে পর্যাপ্ত বইও রয়েছে। ক্রেতাদেরও ভিড় থাকছে নিয়মিত। যদিও প্রচার নাই। মিডিয়া নাই। তবুও যতটুকু আসছে এতেই কম না।

এমদাদিয়া লাইব্রেরির কর্মচারী নসির উদ্দিন জানান, স্টলে যথেষ্ট বই উঠিয়েছেন তারা। ক্রেতাদেরও ভিড় রয়েছে। তবে শুক্রবার তুলনামূলক বেশি ক্রেতা থাকেন বলে জানান তিনি। কারণ জানতে চাইলে বলেন, জুমার দিনে সবাই আসেন। তাছাড়া শুক্রবার অনেক লেখক, বক্তা, ইসলামিক শিল্পী, ক্বারি ও বড় আলেমরা আসেন এজন্য মানুষেরও ভিড় থাকে।

মেলা কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের মেলায় ৬৩টি স্টল স্থান পেয়েছে। প্রাথমিক আবেদন পড়েছিল ৮০টির বেশি। জায়গা স্বল্পতার কারণে স্টল মালিকদের উপস্থিতিতেই লটারির মাধ্যমেই বাছাই করা হয়। লটারি বিজয়ী ৬৩টি প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়।

মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক মো. শাহরুল হুদা বলেন, আমাদের এমনিতেও জায়গা কম। তেমন কোনো প্রচার প্রচরণাও নেই। নামাজের পর বায়তুল মোকাররমে ঘোষণা দেওয়া হয়। গণমাধ্যমে কিছু প্রচার হয়। এতটুকুর মধ্য থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। আগমীতে বড় করে করার পরিকল্পনা আছে, তবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জায়গারও স্বল্পতা রয়েছে।

বেচাকেনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের মেলায় অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই আয়োজনে নিজেকে সফল মনে করছে। স্টল মালিকরাও সন্তুষ্ট আছে। মেলায় ক্রেতাদের ভিড় দেখে আমরা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

উল্লেখ্য, ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে গত ১৯ অক্টোবর মেলা শুরু হয়। ৩ নভেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পরে ৯ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

আরো পড়ুন: 

শীতের আগমনী বার্তা : কদর বাড়ছে লেপ-তোশকের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *