নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: মানুষের চিত্ত-বিনোদনের অন্যতম উপাদান হচ্ছে শখ। মানুষ তার পেশা বাদে অন্য যে পেশায় কাজ করে আনন্দ লাভ করে তাই শখ। মানুষের জীবনে শখের কোনো শেষ নেই। একেক জনের শখ একেক রকম হয়। যেমন কারো শখ ঘুরে বেড়ানো, তাই সে তার শখ পূরণ করতে ছুটে চলে দেশ-বিদেশ। আবার কারো শখ ছবি তোলা, তাই সে প্রতিদিন তার ক্যামেরায় বন্দি করে নানা রঙের নানা ঢঙের ছবি। কারো শখ বাগান করা তাই সে গড়ে তুলে নানা জাতের বৃক্ষের বাগান। এসব শখের মধ্যে মানুষের অন্যতম আরেকটি শখ হচ্ছে মাছ ধরা। বেশিরভাগ মানুষই মাছ শিকারে ভালোবাসেন। মাছ শিকারে যে সকল অভিজ্ঞতা হয় তার মধ্যে ধৈর্য্য অন্যতম।
মাছ ধরার শখ পূরণ করতে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকায় কয়েকটি খামার রয়েছে। এসব খামারে আপনি যখন ইচ্ছে তখনই গিয়ে মাছ ধরে শখ পূরণ করতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে আগে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে। প্রথমে নিজ এলাকার মানুষের জন্য টিকিট কেটে মাছ ধরার এ নিয়ম চালু করলেও এখন দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে মাছ শিকারে। বছর পাঁচেক আগে থেকে শুরু হয় টিকিট কেটে মাছ ধরার শখ পূরণের সুযোগ। এসব খামারে রয়েছে রুই, কাতলা, মৃগেল, রাজপুঁটি, নাইলোটিকা, সিলভার কার্পসহ নানান রকমের মাছ।
এখানে মাছ শিকার করার নিয়ম একেক খামারে একেক রকম। কারণ খামার ভেদে মাছেরও ভিন্নতা রয়েছে। তাই টিকিটের দামও আলাদা। টিকিট কেটে ছিপ দিয়ে মাছ ধরা হয় এসব খামারে। এক ছিপ ২৪ ঘণ্টার জন্য ৫শ থেকে হাজার টাকা হয়।
টিকিট কেটে মাছ শিকারে আসা শরীফ আহমেদ বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরতে ভালোবাসি। এটাকে আমার শখও বলতে পারেন। আগে বাবা মাছ শিকারে গেলে আমিও যেতাম। এখন বড় হয়ে সে শখ পূরণ করতে পারছি না। তাই বন্ধুদের মাধ্যমে খবর পেয়ে এখানে ছুটে আসি টিকিট কেটে মাছ শিকারে। ভালোই লাগছে বহুদিন পরে মাছ ধরতে পেরে।
সিদ্ধিরগঞ্জের বাতানপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. রায়হান ও ওসমান গনি নামের দুই যুবক বলেন, টিকিট কেটে মাছ শিকারের জন্য আমাদের এলাকায় অনেক জায়গা থেকে মানুষ আসে। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতি বেশি থাকে। মানুষ মাছ শিকার করে অনেক আনন্দিত হয় যা আমাদের কাছেও ভালো লাগে।
মো. আহসান উল্যাহ নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, বাতানপাড়া এলাকাটি নিরিবিল পরিবেশ থাকায় টিকিট কেটে মাছ শিকারের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই সপরিবারে ঘুরে বেড়ানোর জন্য আসছেন।
এসব খামারের তত্ত্বাবধানে রয়েছে স্থানীয় কয়েকজন। তাদের মধ্যে একজন মো. ইকবাল হোসেন জানান, কয়েক বছর ধরে তিনি টিকিট কেটে মাছ শিকারের খামারের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। একেক খামারের দায়িত্বে একেকজন রয়েছেন। এখানে অনেকে আসে মাছ শিকারে। করোনা ভাইরাসের জন্য এবার উপস্থিতি কম। তবে যখন লকডাউন ছিলো না তখন ঢাকা, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জসহ আশেপাশের জেলা থেকে মানুষ এখানে এসে টিকিট কেটে মাছ শিকার করতো।