শিল্প ও বাণিজ্য

চীন থেকে ফিরে যাওয়া বিনিয়োগ টানতে কতটুকু প্রস্তুত বাংলাদেশ

ধূমকেতু প্রতিবেদক: করোনা মহামারীর মধ্যেই চলছে অর্থনৈতিক নানা হিসাব-নিকাশ। কৌশলগত কারণে কোভিড নাইনটিনের উৎপত্তিস্থল চীন থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। এসব বিনিয়োগ টানতে রীতিমতো প্রতিযোগিতায় নেমেছে ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মিয়ানমারসহ প্রতিযোগী দেশগুলো।

করোনা-পরবর্তী সময়ে চীনের হাতছাড়া হওয়া বিনিয়োগ টানতে নানা প্রণোদনা ও কৌশলী পদক্ষেপ নিচ্ছে ভারত, ভিয়েতনামসহ উন্নয়নশীল বিভিন্ন দেশ। এই সুযোগ গ্রহণ করতে কতটুকু প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ?

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিনিয়োগ টানতে ব্যবসা শুরুর প্রক্রিয়া যেমন সহজ করতে হবে, তেমনি নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।

চীনা বিনিয়োগ টানতে তৎপরতা শুরু করেছে বাংলাদেশও। তবে চীন থেকে ফিরে যাওয়া বিদেশী বিনিয়োগ কি টানতে পারবে বাংলাদেশ?

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আমরা মুখে বেশ কথা বলতে পারি। কিন্তু কাজ করতে গেলে এক দিনের কাজ একমাসেও হয় না।’

বিশ্লেষকদের মতে, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলাসহ বিনিয়োগের দ্বার খোলা থাকলেও হয়রানিমুক্ত পরিবেশ এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতি কৌশলের অভাবে হোঁচট খাচ্ছে বিদেশী বিনিয়োগ।

বিআইডিএস-এর জ্যৈষ্ঠ গবেষক নাজনিন আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে নিয়মগুলো খুব ঘন ঘন পরিবর্তন হয়। ভ্যাট, ট্যাক্স, এগুলোর নিয়ম। এগুলো কিন্তু ব্যবসা চলাকালীন কী পরিমাণ লাভ হবে তার উপর প্রভাব ফেলে। এটা কিন্তু যে কোনো ব্যবসায়ীকে হতাশ করে।’

সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হলে আমাদের কর কাঠামোর মধ্যে একটা স্থিতিশীলতা আনতে হবে। যারা বিনিয়োগ করতে আসেন তারা তো ১-২ বছরের জন্য বিনিয়োগ করতে আসেন না।’

বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে বিরোধ নিস্পত্তি এবং অর্থ বা সম্পদ স্থানান্তরের জটিলতাও দূর করতে হবে বলে মনে করেন বিআইডিএস জ্যৈষ্ঠ গবেষক নাজনিন আহমেদ।

কোভিড-পরবর্তী সময়ে বেকারত্বের ধাক্কা সামাল দিতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে বিনিয়োগ বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা।

একই সঙ্গে তারা মনে করেন, শিল্প-কারখানা নিবন্ধন এবং আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করে ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে সহজ করতে পারলে বাংলাদেশ চীন থেকে সরে যাওয়া বিনিয়োগের একটি বড় অংশ টানতে সক্ষম হবে। কারণ এ দেশে সস্তা শ্রমিক রয়েছে এবং উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রদত্ত শুল্ক সংক্রান্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বাংলাদেশের অনুকূলে রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *