নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: প্রকৃতিতে হেমন্তের মাঝামাঝি এখন। হালকা কুয়াশা চারিদিকে। কুয়াশা ভেদ করে সুর্যের আলো ফুটছে। কুয়াশা কাটতে না কাটতেই বিলের দিকে ছুটছেন মানুষ। সারি সারি লাইন ধরে রসুন ক্ষেতের মেঠো পথে মানুষের ঢল।
কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য সবার কাঁধে মাছ ধরার সরঞ্জাম। যাচ্ছেন সবাই বিলের বাউৎ উৎসবে। এ যেন প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দর্য।
শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে চলনবিলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের রাঙ্গালিয়ায় রুহল বিলে মাছ ধরার উৎসব। পলো ও বিভিন্ন প্রকার জাল নিয়ে হাজার হাজার শৌখিন মৎস্য শিকারি মেতেছেন এই উৎসবে।
মাছ ধরার এই উৎসবের নাম বাউৎ উৎসব। প্রতি বছর অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি শনি থেকে মঙ্গলবার বাউৎ উৎসব হয়।
দীর্ঘদিন ধরে চলনবিলে এই বাউৎ উৎসবের রেওয়াজ রয়েছে। বিলের পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই পদ্ধতিতে মাছ ধরা শুরু হয়। আগে বিলে প্রচুর মাছ ছিল। ফলে এই মৌসুমে প্রায় প্রতিদিনই পলো দিয়ে অসংখ্য মৎস্য শিকারি মাছ ধরত। কিন্তু এখন মাছ কমে গেছে। ফলে বিলপারের ২০ থেকে ২৫টি গ্রামের মানুষ একত্র হয়ে এই উৎসবে মিলিত হয়। ধনী-গরিবের ভেদাভেদ নেই এই উৎসবে। যার পলো জাল আছে, সে-ই নামতে পারেন শিকারে।
হাঁটু পানিতে পলো, বিভিন্ন প্রকার জাল নিয়ে বিলে নেমেছেন হাজার হাজার শৌখিন মৎস্য শিকারি। হৈচৈ আর চেঁচামেচিতে মুখর চারপাশ। এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত মাছ তাড়া করে বেড়াচ্ছে তারা।
বাউৎ উৎসবে চলনবিলের আশপাশের প্রায় ২০-২৫টি গ্রামসহ সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, প্রায় ২০ হাজার মানুষ অংশ নিচ্ছে। খণ্ড খণ্ড ভাগে এরা বিলে এসে নামছেন। যে যা মাছ পাবেন, তা নিয়ে বাড়ি ফিরবেন।
আরো পড়ুন:
হাতির আক্রমণে মারা গেলেন হাতি হত্যায় অভিযুক্ত ব্যক্তি