শিল্প ও বাণিজ্য

চলনবিলে আছে সাড়ে ৪শ’ হাঁসের খামার || কমেছে বেকারত্ব

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের বিভিন্ন বিলে বাণিজ্যিকভাবে হাঁসের খামার করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেলো, চলনবিলেই হাঁসের খামার আছে ৪৫১টি। এসব খামারে হাঁস আছে দেড় লাখেরও বেশি। আবার স্থানীয় পরিবারগুলোও পালন করছে প্রায় ৭-৮ লাখ হাঁস। এতে কমেছে বেকারত্ব, বেড়েছে আয়। পূরণ হচ্ছে স্থানীয়দের আমিষের চাহিদাও।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নাটোর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, জেলার প্রতিটি খামারেই অন্তত ২-৩ জন কাজ করছে। খামারগুলোতে প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার হাঁস পালন করা হচ্ছে। বিলে পানি বেশি থাকলে খরচ তেমন হয় না। পানি না থাকলে খরচ সামান্য বাড়ে। তিনি আরও বলেন, বছরে একেক খামারির কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকা আয় হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর বাইরেও নাটোর জেলায় হাঁস পালন করছে আরও ৩০-৪০ হাজার পরিবার। সেখানেও প্রায় ৭-৮ লাখ হাঁস আছে। প্রতিটি পরিবার বছরে আয় করছে ২০ হাজার টাকা করে।

হাঁস পালন একটি সম্ভাবনাময় ও লাভজনক খাত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ খাতে আরও মানুষকে সংযুক্ত কাজ করে যাচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ। বছরে একেক খামারি কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকা আয় করেন।

জেলার সিংড়া, গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও নলডাঙ্গা বিলের বিভিন্ন স্থানে হাঁসের খামার দেখা যায়। সকাল হলেই খামারিরা হাঁস নিয়ে রওনা দেন বিলের পানিতে। রাতের আগে ওরা আবার ফিরে আসে খামারে। কেউ আবার পানিতেই জালের ঘের করে হাঁসের খামার করেছেন।

সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা রোকেয়া জানান, তিনি ২০-২৫টি হাঁস পালন করেন। সকালে হাঁসগুলো পাশের পুকুরে চলে যায়। সারাদিন পুকুরের শামুক-ঝিনুক খায়। তিনি নিজেও কিছু খাবার দেন। পরিবারের ডিম ও মাংসের চাহিদা পূরণ ছাড়াও হাঁস বিক্রি করে আয় করছেন তিনি।

সিংড়া উপজেলার নিংগইন এলাকার খামারি সোহাগ জানান, তিনি সারা বছরই হাঁস পালন করেন। এখন তার খামারে ক্যাম্বেল ও জিংডিং জাতের ৫৮২টি হাঁস রয়েছে। ৪-৫ মাস বয়সী হাঁস কেনেন সোহাগ। সাড়ে ৫ মাস বয়স থেকেই ডিম দেওয়া শুরু করে। এখন তার খামারের ৪৮০টি হাঁস ডিম দিচ্ছে। বছরে খরচ বাদে ৩-৪ লাখ টাকা লাভ থাকে তার।

সোহাগের বাবা ফজলুর রহমান জানান, ২০ বছর বয়স থেকেই তিনি হাঁস পালন করেন। বর্ষাকালে ভাসমান খামারে হাঁসগুলো বিলের পানিতেই বেশি সময় থাকে। বিলের পানি নেমে গেলে ২-৩ মাস বাড়ির খামারে রাখা হয়৷

তিনি আরও বলেন, একটি হাঁস গড়ে বছরে ৩০০টি ডিম দেয়। তিন বছর পর ডিম দেওয়া কমতে থাকে। তখন মাংসের জন্য হাঁসগুলো বিক্রি করেন৷ বর্তমানে প্রতিটি ডিম ১১-১২ টাকা ও প্রতিটি হাঁস গড়ে ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়।

ফজলুর রহমান বললেন, এক দিনের বাচ্চা কিনে ডিম উপযোগী করতে ৫শ হাঁসে খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা। ডিম দেওয়া শুরু করলে খরচ নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *