স্বাস্থ্য

গুরুতর অসুস্থ করবে না ওমিক্রন : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: ব্যাপকভাবে জিনগত রূপ পরিবর্তন করে আসা করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সম্পর্কে এখনো অনেক কিছুই অজানা। তবে প্রাথমিকভাবে হাতে আসা তথ্য-উপাত্ত ইঙ্গিত দিচ্ছে, ডেলটা কিংবা করোনার অন্য ধরনগুলোর চেয়ে ওমিক্রন মানুষকে বেশি অসুস্থ করবে না। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) জরুরি সেবাবিষয়ক পরিচালক মাইকেল রায়ান এসব তথ্য দেন।

মাইকেল রায়ান মঙ্গলবার এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, প্রাথমিকভাবে আসা তথ্য-উপাত্ত করোনার নতুন এ ধরনে গুরুতর অসুস্থতার কোনো ইঙ্গিত দিচ্ছে না। গুরুতর অসুস্থতা বরং কম হওয়ারই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য এ নিয়ে তিনি আরও গবেষণার ওপর জোর দিয়েছেন।

মাইকেল রায়ান আরও বলেন, করোনার নতুন এ ধরন বেশি দিন আগে শনাক্ত হয়নি। তাই এর যেকোনো ইঙ্গিত ব্যাখ্যার ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, একই সঙ্গে কোভিডের বিদ্যমান টিকাগুলো থেকে পাওয়া সুরক্ষা যে ওমিক্রন একেবারে পাশ কাটিয়ে যাবে—এমন কোনো ইঙ্গিতও পাওয়া যায়নি।

রায়ান আরও বলেন, ‘আমাদের হাতে আছে উচ্চমাত্রায় কার্যকর টিকা। গুরুতর অসুস্থতা কিংবা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার দিক বিবেচনায় এ পর্যন্ত আসা করোনার সব কটি ধরনের ক্ষেত্রে এসব টিকায় সুরক্ষার বিষয়টিও প্রমাণিত।’ ডব্লিউএইচওর এই কর্মকর্তা বলেন, এটা ভেবে বসে থাকার কোনো কারণ নেই যে ওমিক্রনের ক্ষেত্রে এমনটা হবে না। দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের করা প্রাথমিক একটি গবেষণায় পাওয়া তথ্য-উপাত্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুরক্ষার দিকটি বিবেচনায় বিদ্যমান কোভিড টিকাগুলো অন্তত কাজ করবে।

এদিকে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার আফ্রিকা হেলথ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান বিজ্ঞানী বলেছেন, ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার দুই ডোজের সুরক্ষা ‘আংশিক ভেদ করতে পারে’ এ ওমিক্রন।

যদিও গবেষণা বলছে, যারা করোনার দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করেছিলেন এবং আগে সংক্রমণ হয়েছিল, তাদের রক্ত বেশির ভাগ সময় করোনার নতুন ধরনকে দুর্বল করতে সক্ষম। তবে করোনার বুস্টার ডোজ সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।

রয়টার্সের তথ্যমতে, ফাইজার-বায়োএনটেক শুধু অমিক্রন নিয়ন্ত্রণের জন্য নির্দিষ্ট একটি টিকা উদ্ভাবনে কাজ করছে। আগামী মার্চের মধ্যেই এটি পাওয়া যেতে পারে বলে তারা প্রত্যাশা করছে।

গত মাসের শেষ দিকে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রথম রোগী শনাক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। অল্প কয়েক দিনে এটি খুব দ্রুত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) বুধবার দেওয়া তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৫৭টি দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, সংক্রমণের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যাও বাড়তে পারে।

ডব্লিউএইচও এর সাপ্তাহিক মহামারিসংক্রান্ত প্রতিবেদনে বলেছে, ওমিক্রনের তীব্রতা মূল্যায়নের জন্য আরও বেশি তথ্য প্রয়োজন। টিকা নেওয়ার পর মানুষের শরীরে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অমিক্রন থেকে কতটা সুরক্ষা দিতে পারবে, তা-ও অনিশ্চিত। এমনকি ডেলটার তুলনায় অমিক্রনের তীব্রতা সমান বা সম্ভাব্য কম হলেও এটা প্রত্যাশিত যে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে।

করোনা মহামারির ধাক্কা খানিকটা কাটিয়ে উঠে আবারও স্বাভাবিক জীবনযাপনের দিকে যাচ্ছিল বিশ্বের মানুষ। মিক্রন শনাক্ত হওয়ায় বিশ্বের বেশ কিছু দেশ পুনরায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, খুব শিগগির বাড়ি থেকে কাজ করার মতো করোনার কঠোর বিধিনিষেধ জারি করতে পারে যুক্তরাজ্য।

আরো পড়ুন:

বিশ্বে ওমিক্রনে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর খবর নেই

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *