আন্তর্জাতিক

গুজরাটের ভেঙে পড়া সেতুতে টেন্ডার ছাড়াই মেরামতির কাজ

গুজরাটের মোরবিতে সাত মাস ধরে সেতু বন্ধ রেখে মেরামতির কাজ চলেছে। অথচ, কোনো টেন্ডার ছাড়াই মেরামতির দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি সংস্থাকে।

ওরেভা বলে যে সংস্থা এই মেরামতি করেছে, তারা একশ’ বছরের বেশি পুরোনো এই সেতুর পুরোনো তারগুলোও বদল করেনি। যার ফলে সেতুটি অতজন মানুষের চাপ সহ্য করতে পারেনি এবং দুর্ঘটনা হয়েছে। ৪৭টি শিশুসহ ১৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মোরবি পুরসভা এই কাজের দায়িত্ব ওরেভাকে দিয়েছিল। এনডিটিভি জানাচ্ছে, চুক্তিপত্র অনুযায়ী, কোনো টেন্ডার ডাকা হয়নি। মেরামতির পর দেখা যাচ্ছে, যে তারগুলো সেতুটিকে ধরে রেখেছিল, তার মধ্যে বেশ কয়েকটি তার পুরনোই থেকে গেছে। সেগুলো বদলানো হয়নি। অথচ, এই তারগুলো বদল করা দরকার ছিল।

ফরেনসিক ল্যাবরেটরি জানিয়েছে, প্রচুর মানুষের ভার সেতুটি সহ্য করতে পারেনি। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা সেতুর নিচ থেকে লোহার স্যাম্পেলও কেটে নিয়ে গেছেন পরীক্ষা করার জন্য।

সেতুটি ভেঙে পড়ার আগের ফুটেজ থেকে দেখা যাচ্ছে. একদল মানুষ ছবি তুলছেন এবং অন্যরা সেতুটিকে দোলাবার চেষ্টা করছেন। তখন চাপ সহ্য করতে না পেরে তার ছিঁড়ে যায় ও সেতুটি ভেঙে পড়ে।

পুরসভার প্রধান এখন বলছেন, সেতুটি খুলে দেওয়ার আগে তাদের জানানো হয়নি। কোম্পানি ফিটনেস সার্টিফিকেটও নেয়নি। এনডিটিভি জানাচ্ছে, ওরেভা এই কাজটি দেবপ্রকাশ সলিউশন নামে একটি কোম্পানিকে আউটসোর্স করে দিয়েছিল। নতুন করে খুলে দেওয়ার আগে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, তারা দুই কোটি টাকায় সেতুর পুরো নবীকরণ করেছেন।

এখন প্রশ্ন উঠেছে, একটি ঘড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিকে কী করে সেতুর মেরামতির কাজ দেওয়া হলো। ওরেভা একটি ঘড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা বলে অভিযোগ।

বিশ্বনেতাদের শোক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুটিন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী লাপিদসহ বহু রাষ্ট্রনেতা গুজরাটের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন।

বাইডেন একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘জিল ও আমার হৃদয় ভারতের স্বজন হারানো পরিবারের সঙ্গে আছে। সেতু ভেঙে পড়ে এতগুলো জীবন অকালে চলে গেল। আমেরিকা ও ভারতের জনগণের মধ্যে একটা অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক আছে। আমরা ভারতের জনগণের পাশে আছি।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো বার্তায় বলেছেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনায় আমি শোকার্ত।’ তিনি মৃতের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী লাপিদ বলেছেন, ‘ইসরায়েলের মানুষ এখন ওই দুর্ঘটনাগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করছে।’

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রানিল বিক্রমসিংহে বলেছেন, তিনি সেতু ভেঙে এতজন মানুষের মৃত্যুর কথা শুনে শোকস্তব্ধ।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ‘আমরা মৃতদের পরিবারকে আমাদের সহানুভূতি ও শোক জানাচ্ছি।’

মোদী যাচ্ছেন বলে

নরেন্দ্র মোদি যাচ্ছেন বলে মোরবির হাসপাতালের কলি ফেরানো হচ্ছে। যা নিয়ে সোচ্চার কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি-আপ। এই বিষয় নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *