ডেস্ক প্রতিবেদন, ধূমকেতু বাংলা: আপনি হয়তো একটি ফুড ব্যাংক, বুক ব্যাংক এমনকি খেলনা ব্যাংকের কথা শুনেছেন। কিন্তু ‘ড্রেস ব্যাংক’-এর কথা শুনেছেন কখনও? এটি এমন একটি মডেলের দাতব্য, যেখানে অপেক্ষাকৃত অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের মেয়েরা তাদের বিয়েতে ব্যবহৃত শাড়ি, পায়ের গোড়ালি লম্বা স্কার্ট এবং অন্যান্য পোশাক দান করেন করেন গরিব ঘরের মেয়েদের বিয়ের জন্য।
এই ‘ড্রেস ব্যংকের’ উদ্যোগ নিয়েছেন পেশায় ট্যক্সিচালক নাসার থুথা। তিনি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার মালাপ্পুরম জেলার থুথা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি এর মাধ্যমে ২৬০ জনেরও বেশি সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের কনে তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনটিতে পোশাক দিয়ে সাহায্য করেছেন।
গত বছর সৌদি আরব ফেরত ৪৪ বছর বয়সী থুথা ওয়াটস অ্যাপ ও ফেসবুকের মাধ্যমে মানুষ কাছে তাদের অলস পড়ে থাকা বিয়ের পোশাক দান করার জন্য অনুরোধ জানান।
তার এই উদ্যোগের কথাটি ছড়িয়ে পড়লে ধীরে ধীরে বেনামে তার দরজায় ডজন ডজন ভারী পোশাকের প্যাকেট আসতে শুরু করে।
‘বিয়ের পোশাক পুরোটাই অসার। এগুলো কয়েক ঘণ্টার জন্য পরা হয় এবং তারপর আর কখনও আলমারি থেকে বের করা হয় না। এটি উপলব্ধি করে অনেক পরিবার আমাদের কাজে সমর্থনের জন্য এগিয়ে এসেছে’, বলেন নাসার থুথা।
থুথা জানান, তিনি রিয়াদে ফুড সুপারমার্কেটে ১০ বছর কাজ করে আট বছর আগে ভারতে ফিরে আসেন।
এই পরোপকারী জানান, তিনি ২০২০ সালের এপ্রিলে পরীক্ষামূলকভাবে ঘরের একটি কক্ষে ‘ড্রেস ব্যাংক’ চালু করেছিলেন।
থুথা বলেন, কেউ যদি অসুস্থতার কারণে কিংবা টাকার জন্য দূর থেকে আসতে না পারেন, তাহলে তাদের কাছে সরাসরি স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে পোশাক পৌঁছে দেওয়া হয়।
‘কখনও এসব পোশাক ফেরত চাই না, তবে উৎসাহিত করি তারাও যেন অন্যের প্রয়োজনে এই পোশাক নিয়ে এগিয়ে আসেন’, যোগ করেন তিনি।
কেরালার বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বন্ধুদের দ্বারা দান করা পোশাকগুলো সংগ্রহ করা হয়। পরে সেগুলো ড্রাই-ক্লিনিং শেষে বায়ুরোধী প্যাকেটে সুন্দরভাবে থুথার বাড়ির র্যাকে সুন্দরভাবে মজুদ করা হয়।
‘সৃষ্টিকর্তার কসম, এই ড্রেস ব্যাংক চালাতে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে কোনও টাকা বিনিয়োগ করতে হয়নি। আমি শুধু একটি মাধ্যম গরিব গ্রহিতা নারী ও সদয় দাতাদের মধ্যে’, বলেন থুথা।
বর্তমানে এই ব্যাংকে ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার ভারতীয় রুপির আটশ’ পোশাক রয়েছে, যা মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিস্টান কনেদের বিয়েতে ব্যবহৃত হয়।
আরো পড়ুন:
কারাগার ভাড়া নিচ্ছে ডেনমার্ক|| বছরে ১৪৫ কোটি টাকা