স্বাস্থ্য

খাদ্যে পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: করোনার মহামারীতে সব বয়সের মানুষের জন্য পুষ্টিগুণ নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সব বয়সের মানুষই অপুষ্টিতে ভুগতে পারে। মা ও শিশুর পুষ্টির পাশাপাশি প্রবীণদের পুষ্টিসেবা নিয়েও কাজ করতে হবে। প্রত্যাশিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে অপুষ্টিতে আক্রান্ত হন অনেক প্রবীণ নারী-পুরুষ। অপুষ্টিতে আক্রান্ত করোনা রোগীকে নানা জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টি সচেতনতা বাড়াতেই হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুষ্টি প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকার। খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ না হলে পুষ্টি সমস্যার সমাধান হবে না। তাই খাদ্য নিরাপত্তা ও সম্পদে সবার অধিকার নিশ্চিত করেছে বর্তমান সরকার। বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ও ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। দু’ বেলা খাবার নিয়ে মানুষ আজ সারাদিন চিন্তা করে না। এখন নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা দরকার। বর্তমান সরকার অবশ্য এ বিষয়ে বেশ কিছু কঠোর আইন প্রণয়ন করেছে। নিরাপদ খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় দরকার।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডীন, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, পুষ্টি মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। করোনাকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মজবুত থাকা দরকার। অপুষ্টিতে আক্রান্ত করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ। আমরা এখন পুষ্টিতে সমৃদ্ধ হতে চাই। এক সময় ক্ষুধা-দারিদ্রের দেশ ছিল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ওই অধ্যায় থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমরা এখন আত্মবিশ্বাসী জাতিতে পরিণত হয়েছি।

করোনার থাবা থেকে রেহাই পেতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ‍উপর জোর দিয়ে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, করোনাকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে হবে। অপুষ্টি দূর করতে  ব্যাপক প্রচার চালিয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার পেতে দামী খাবার খেতে হয় না। আমাদের বাড়ীর চারপাশেই স্বল্প খরচে পুষ্টি সমৃদ্ধ ফলমূল, শাক সবজি পাওয়া যায়। কৃষি সেক্টরের সফলতায় শান্তিতে রয়েছে দেশের কৃষককূল। সারা বছরই বিভিন্ন  ফসল উৎপাদিত হয়। পতিত পড়ে থাকে কৃষিজমি। খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করার পাশাপাশি পুষ্টিতেও বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করে তুলব। সমন্বিতভাবে কাজ করলে এক্ষেত্রেও প্রত্যাশিত সফলতা আসবে বলে জানান অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।

এদিকে, দেশের সব মানুষের বিশেষ করে নারী ও শিশুদের পুষ্টির অবস্থার উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সম্প্রতি তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তার উন্নতিসহ সার্বিকভাবে দেশের অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় দেশের প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের কাছে সকল সময়ের জন্য খাদ্য সহায়তা দিতে সক্ষম হয়েছি।  বর্তমান সরকারের আমলে মা ও শিশু মৃত্যুর হার কমানো ছাড়াও ক্ষুধা এবং দারিদ্র্যের হার কমানোর মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল (এমডিজি) অর্জনে বাংলাদেশ সফল হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনের লক্ষ্যে মা ও শিশুদের খাদ্য এবং পুষ্টি নিরাপত্তার উন্নয়নসহ শিশুদের খর্বতা ও অপুষ্টির হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর লক্ষ্য নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কাজ করছে সরকার। সামাজিক কর্মসূচির আওতায় বছরে ৫ মাস ৫০ লাখ দরিদ্র পরিবারকে মাত্র ১০ টাকা দামে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *