ধীরে ধীরে জমে উঠছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার ২৮তম আসর। শীতে রাজধানীবাসী অনেকটাই নাজেহাল হলেও মেলার দ্বিতীয় দিনে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠছে মেলা প্রাঙ্গণ। ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়ে বিক্রেতারাও খুশি।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজিত মেলার দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে অনেকটা ঢিলেঢালা ভাব থাকলেও বিকেল থেকেই বাড়তে শুরু করে ক্রেতাদের সমাগম।
মেলায় ঘুরতে আসা এক ক্রেতা বলেন, আমি পরিবার (স্ত্রী) ও বাচ্চাদের মেলায় ঘুরতে নিয়ে এসেছি। আমার পরিবার পছন্দ মত কিছু গৃহস্থলী পণ্য কিনেছে। মেলায় এসে দেখে ভালোই লাগছে।
আরেকজন ক্রেতা বলেন, মেলায় এসেছি, ঘুরে দেখেছি, খেয়েছি। হাতের চুরি ও গয়না কিনেছি, অনেক ভালো লাগছে।
স্টল ও পণ্যভেদে বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মতপার্থক্য। শীতবস্ত্র আর মেয়েদের পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এক বিক্রেতা বলেন, আমরা অন্যান্য বছরে মেলা শুরুর ১/২ দিনে যেমন ক্রেতা সমাগম পেতাম সে তুলনায় ভালোই সাড়া পাচ্ছি। আবার আহামরি ভালোও বলা যায় না।
সেই তুলনায় ইলেকট্রিক পণ্য বা গৃহস্থালীর প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে বেচাকেনা তেমন নেই। তবে আগামীতে বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা। এক বিক্রেতা বলেন, এখন তো মাত্র মেলা শুরু হলো। এখন ক্রেতা সমাগম মোটামুটি। আশা করি আগামী শুক্রবার ও শনিবার থেকে ক্রেতা বাড়বে।
কেবল দেশীয় উদ্যাক্তাদের পণ্যই নয়, সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, হংকং, ভারত, ইরান, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের পণ্যেও সেজেছে বাণিজ্য মেলা। এমনই একজন উদ্যোক্তা বলেন, সাধারণত ১ জানুয়ারি থেকে বাণিজ্য মেলা শুরু হয়। কিন্তু এবার ২০ দিন দেরিতে মেলা শুরু হয়েছে। সে জন্য অবশ্যই একটু প্রভাব পড়েছে। তারওপর শীতের প্রকোপ বেশি। সামনে কি অবস্থা হয় কে জানে। আমরা বাংলাদেশি ক্রেতাদের নতুন কিছু উপহার দিতে চাচ্ছি।
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের কারণে একটু দেরিতে হলেও আগের কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মেলা বেশি জমবে বলে মনে করছেন দর্শনার্থীরা।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০২৪ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের বাণিজ্য মেলার প্রবেশ টিকিট মূল্য গতবারের চেয়ে ১০ টাকা বাড়িয়ে ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর শিশুদের টিকিটের মূল্য ২০ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ টাকা। এবারের আয়োজনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন ও স্টলের সংখ্যা ৩৫১টি। এছাড়া দুই হলে ১৭৪টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে থাকছে রেস্তোরাঁ, মসজিদ, ব্যাংক, এটিএম বুথ, শিশু পার্ক, মা ও শিশু কেন্দ্র।
এ বছর বাড়ানো হয়েছে বাসের সার্ভিস রুট। ফার্মগেট থেকে মেলা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের নিয়ে যাতায়াত করবে বিআরটিসি পরিবহন। এই বাস পরিষেবার মাধ্যমে একজন যাত্রী মাত্র ৭০ টাকায় ফার্মগেট থেকে সরাসরি মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছাতে পারবেন।