আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ধূমকেতু ডটকম: তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রতিনিয়ত বিস্ময় সৃষ্টি করছে চীন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার দেশটির বিজ্ঞানীরা একটি কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরির কথা জানিয়েছেন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপারকম্পিউটারের চাইতেও ১০০ লাখ কোটি গুণ দ্রুততার সঙ্গে গণনা করতে পারে বলেই তারা দাবি করেন।
এটি শুধু চীনের সাফল্য নয়, দাবিটি যথার্থ হলে তা তথ্যপ্রযুক্তির দুনিয়ার সবচেয়ে যুগান্তকারী আবিষ্কার হতে চলেছে। এরফলে কোয়ান্টাম প্রযুক্তিকে আয়ত্তে আনার দিক থেকে বিজ্ঞান অনেকখানি এগিয়ে যাবে।
তুলনামূলক ছোট আকৃতির একটি কোয়ান্টাম কম্পিউটারও অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারবে। ফলে পদার্থবিদ্যা, মহাকাশ গবেষণা, রসায়নসহ বিজ্ঞানের সকল খাতে আসবে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।
দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শিনহুয়া সায়েন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এসংক্রান্ত গবেষণার কথা উল্লেখ করে জানায়, চীনা গবেষকরা এমন একটি পরীক্ষামূলক কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করেছেন যেটি গাওসিয়ান বোসন সূত্র অনুসারে পদ্ধতিতে ৭৬ ফোটন উপাত্ত বিশ্লেষণ করতে পারে। এটি কম্পিউটার অ্যালগরিদমের একটি প্রচলিত সিম্যুলেশন প্রক্রিয়া। কিন্তু, বর্তমানের কোনো সুপার কম্পিউটারই এতোটা শক্তিশালী নয়।
চীনের সাফল্য কোয়ান্টাম প্রতিযোগীতায় যোগ করেছে এগিয়ে থাকার নতুন গতি। প্রযুক্তিখাতে একেই বলা হয়; কোয়ান্টাম সুপারমেসি। এই সংজ্ঞা অনুসারে; একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যেকোনো কাজ সর্বাধুনিক সুপারকম্পিউটার নতুন ধরনের অ্যালগরিদম বা হার্ডওয়্যারের সাহায্য নিয়েও কোয়ান্টাম কম্পিউটারের গণনাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবে না, এমন অবস্থাকে নির্দেশ করা হয়।
তথ্যপ্রযুক্তিতে কোয়ান্টাম নতুন খাত হলেও এর অগ্রগতির হাত ধরে রাতারাতি তথ্য বিশ্লেষণ করার অবিশ্বাস্য গতি লাভ করতে পারে।
চীনা বিজ্ঞানীদের মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীরা হচ্ছেন আলফাবেট ইঙ্কের মালিকানাধীন গুগল এবং অ্যামাজনের গবেষক দল। তালিকায় আছে মাইক্রোসফট কর্পও। যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বন্দ্বে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি একটি বড় প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হয়েও উঠেছে।
এর আগে গত বছর গুগুল দাবি করে, তারা এমন একটি কম্পিউটার তৈরি করেছে যা ২০০ সেকেন্ডে এমন জটিল গণনা করতে পারে, যা করতে সর্বাধুনিক সুপার কম্পিউটারের ১০ হাজার বছর সময় লাগবে। ফলে তারাই প্রথম কোয়ান্টাম সুপারমেসির দাবিদার। তবে চীনা গবেষকরা জানাচ্ছেন, তাদের তৈরি যন্ত্রটি গুগলের পরীক্ষামূলক কম্পিউটারের চেয়ে ১ হাজার কোটি গুণ বেশি দ্রুত কাজ করতে পারে। সূত্র: ব্লুমবার্গ।