স্বাস্থ্য

কোভিড ১৯ বাংলাদেশ থেকে রেমডেসিভির নিচ্ছে মহারাষ্ট্র

ধূমকেতু ডেস্ক: ভারতে করোনা ভাইরাসের হটস্পটে পরিণত হওয়া মহারাষ্ট্র প্রদেশের সরকার গুরুতর কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ থেকে রেমডেসিভির সংগ্রহ করবে বলে জানিয়েছে। ইবোলার ওষুধ হিসেবে পরিচিত রেমডেসিভিরের প্রত্যেক ফাইলের দাম ১২ হাজার রুপি নির্ধারণ করেছে রাজ্য সরকার।

ইবোলার এই ওষুধটি এখনও উৎপাদন এবং বাজারজাত করার অনুমতি পায়নি ভারতের ওষুধ কোম্পানিগুলো। এছাড়া ওষুধটির আবিষ্কারক ও প্যাটেন্টের অধিকারী মার্কিন ওষুধ কোম্পানি গিলিয়াডও এটি এখনও বাজারে ছাড়েনি। যে কারণে মহারাষ্ট্র প্রদেশের সরকার করোনার গুরুতর রোগীদের চিকিৎসায় জরুরি মুহূর্তে ব্যবহারের জন্য এই ওষুধটি বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করছে।

ভারতে এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৪৭ হাজার ৮৫৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন; যাদের মধ্যে ৮০ হাজারের বেশি শুধু মহারাষ্ট্রেই। দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানীখ্যাত মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ের হাসপাতালগুলোতে রোগী উপচে পড়েছে।

গত সপ্তাহে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনায় মারা যাওয়া রোগীদের স্বজনরা লাশ নিচ্ছেন না। এ কারণে মুম্বাইয়ের বেশিরভাগ হাসপাতালের মর্গে এখন লাশের স্তূপ। এছাড়া মহারাষ্ট্রের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ পরায় তা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

মহারাষ্ট্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেস টোপ বলেন, রাজ্য সরকার ১০ হাজার ফাইল রেমডেসিভির সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ব্যয় হবে প্রায় ১২ কোটি রুপি। কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল থেকে এই ওষুধ ক্রয় করা হবে।

তিনি বলেন, সার্স মহামারির সময় এই ওষুধটির কার্যকর ব্যবহার হয়েছিল। বর্তমানে করোনার চিকিৎসার জন্য রেমডেসিভির ব্যবহার করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মহরাষ্ট্রের এই মন্ত্রী বলেন, রাজ্যের গুরুতর রোগীদের এই ওষুধ প্রয়োগ করা হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে ওষুধটি আবারও বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করা হবে।

বিশ্বে বাংলাদেশই প্রথম দেশ হিসেবে রেমডেসিভিরের জেনেরিক সংস্করণ উৎপাদন এবং বিক্রি শুরু করেছে। করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর ওষুধটি বিশ্বে প্রথম উৎপাদন করেছে বাংলাদেশের ওষুধ প্রস্ততকারক কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।

বাংলাদেশের আরেক কোম্পানি এসকেএফও ওষুধটি উৎপাদন করে দেশের হাসপাতালে সরবরাহ শুরু করেছে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিধান অনুযায়ী, বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলো কোনও ধরনের লাইসেন্স ছাড়াই প্যাটেন্টধারী এসব ওষুধের উৎপাদন এবং রফতানি করতে পারে।

গিলিয়াডের একজন মুখপাত্র বলেন, ওষুধটির সরবরাহ বৃদ্ধি করার জন্য গিলিয়াড ইতোমধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পাঁচটি কোম্পানির সঙ্গে স্বেচ্ছা সেবাকেন্দ্রিক লাইসেন্স প্রদান চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ফলে ভারত-পাকিস্তানের কিপলা লিমিটেড, ফিরোজসন্স ল্যাবরেটরিজ, হেটেরো ল্যাবরেটরি লিমিটেড, জুবিল্যান্ট লাইফসায়েন্সেস এবং মাইল্যান কোম্পানি রেমডেসিভির উৎপাদন করে বিশ্বের ১২৭টি নিম্ন আয়ের এবং নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে সরবরাহ করবে।

সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *