প্রচ্ছদ

কৃষ্ণাঙ্গ তরুণী পামেলা আয়ারল্যান্ডের সেরা সুন্দরী

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: আয়ারল্যান্ডে গত ৭৪ বছরে কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী যেটা করতে পারেননি, সেটাই করে দেখালেন পামেলা উবা। ২৬ বছর বয়সী এই কৃষ্ণাঙ্গ নারী ‘মিস আয়ারল্যান্ড-২০২১’ এর মুকুট জিতে নিয়েছেন। এই খেতাব জয়ের পর ক্ষোভ আটকাতে পারেননি তিনি। বলেছেন, এটা জিততে এত বছর লেগে যাওয়ার বিষয়টি বড়ই অদ্ভুত।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, আয়ারল্যান্ডে ১৯৭৪ সাল থেকে সুন্দরী প্রতিযোগিতা হয়ে আসছে। কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী এই খেতাব জিততে পারেননি। এবারই সেই ‘প্রথা’ ভাঙলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানী পামেলা। বিজয়ের মুকুটে জেতার পর তিনি বলেছেন, ‘আমিই প্রথম। তাই আমার অনুভূতিও দারুণ। লোকজন আমাকে দেখছেন এবং আমি কখনোই ভাবিনি যে আজকের এই অবস্থানে আসতে পারব।’

পামেলার বয়স যখন ৭ বছর, তখন মা ও তাঁর তিন ভাইবোনের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আয়ারল্যান্ডে পাড়ি জমান। তারপর থেকেই দেশটিতে পামেলা ও তাঁর পরিবারের সংগ্রাম শুরু। দেশটিতে আশ্রয় পেতে তাঁকে থাকতে হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রে। এরপর তাঁরা কাউন্টি মায়োতে গিয়ে থিতু হন। ওই সময় ছেলে মেয়েদের নিয়ে নিদারুণ কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে পামেলার মায়ের। সরকারের দেওয়া ভাতা থেকেই চলত তাঁদের সংসার।

অতীতের সংগ্রামের কথা ভোলেননি পামেলাও। একজন শরণার্থী হিসেবে আয়ারল্যান্ডে আসা পামেলা আজ দেশটির সেরা সুন্দরী। অতীতের দিনগুলোর কথা স্মরণ করে পামেলা বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রের জীবন ছিল খুবই অদ্ভুত। আমরা সরকারের ওপর পুরোপুরি নির্ভরশীল ছিলাম। আমাদের কাজ করার অনুমতি ছিল না। ওই সময়টা আমার মায়ের জন্য কঠিন ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার বেড়ে ওঠাটাও অদ্ভুত। বন্ধুদের বাসায় আসাকে আমি সত্যিই অপছন্দ করতাম। কারণ, আমার এই কষ্টের জীবন তাদের দেখাতে চাইনি।’

অত্যন্ত মেধাবী পামেলা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়ার সুযোগ পান। বর্তমানে তিনি আয়ারল্যান্ডের বন্দরনগর গালওয়ের একটি হাসপাতালে কর্মরত। আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম রেডিও নিউজবিটকে পামেলা বলেন, ‘করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে আমি একজন সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছি। এটা আমার জীবনের জন্য বড় কিছু।’

পামেলার সুন্দরী প্রতিযোগিতায় আসাটাও অদ্ভুত। তিনি আরও বলেন, মিস গালওয়ে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় একটি পানশালায় কাজ করার সময় তিনি ওই প্রতিযোগিতার মঞ্চে ওঠার সুযোগ পেয়েছিলেন। তখন একজন বিচারক তাঁকে ওই বছরের একজন প্রতিযোগী হিসেবে ভেবেছিলেন। কিন্তু তিনি তা ছিলেন না। তবে ওই নারী বিচারক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে তাঁকে উৎসাহ জুগিয়েছিলেন।

মডেলিংয়ে অতীতে কোনো অভিজ্ঞতায় ছাড়াই মিস গালওয়ে-২০২০ এ অংশ নেন পামেলা। তখন থেকে তিনি বিভিন্ন মহল থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন বলে জানান পামেলা। এখন তিনি ২০২২ সালে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের পুয়ের্তো রিকোয় অনুষ্ঠিতব্য মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন। আশা করছেন, ওই প্রতিযোগিতায় তিনি ভালো করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *