কৃষি-মৎস্য

কৃষিজমি রক্ষায় আসছে সমন্বিত উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: এক ফসলি, দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমি চিহ্নিত করবে সরকার। এরপর তা রক্ষায় কৃষি, ভূমি ও শিল্প মন্ত্রণালয়কে সঙ্গে নিয়ে একটি সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে মূলত কৃষি মন্ত্রণালয় এ উদ্যোগ নিয়েছে।

এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাবনা তৈরির জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে।

আমি যদি জানতে পারি কোনটি এক ফসলি জমি, কোনটি দুই ফসলি জমি, কোনটি তিন ফসলি জমি- তাহলে ব্যবস্থাপনাটা সহজ হবে। তিন ফসলি জমি রক্ষা সহজ হবে, দুই ফসলি জমি তিন ফসলি করা, এক ফসলি জমি দুই ফসলি বা তিন ফসলি করার পরিকল্পনা করা হবে।

এক ফসলি, দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমি চিহ্নিত করে তা রক্ষায় সমন্বিত প্রস্তাবনা তৈরির জন্য গত ২১ মার্চ সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়। ওই সভায় ভূমি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যানকে প্রধান করে খসড়া প্রস্তাবনা তৈরি করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরে গত ৬ জুন ওই কমিটি প্রথম সভা করে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের এক হিসাব থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের বর্তমান আয়তন এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৬৯ দশমিক এক বর্গকিলোমিটার। দেশে বর্তমানে এক ফসলি জমি ১৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৮২ হেক্টর, দুই ফসলি ৪৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৫ সেক্টর, তিন ফসলি ২৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৪৪ হেক্টর, চার জমি এক লাখ ৪৭ হাজার ৫৭৪ হেক্টর ও পাঁচ ফসলি ৯০০ হেক্টর। নিট ফসলি জমি ৯০ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৮ হেক্টর, মোট ফসলি জমি এক কোটি ৯২ লাখ ২৯ হাজার ১৩ হেক্টর। বর্তমানে ফসলের নিবিড়তা ২১৩ শতাংশ এবং জমি ব্যবহারের ঘনত্ব ৬১ শতাংশ।

 কৃষিজমি কমে গেলে খাদ্যনিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়ে যাবে। এজন্য কৃষিজমি রক্ষায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে একটি প্রস্তাব তৈরি করছি। কাজটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

বিএআরসি’র এক কর্মকর্তা জানান, প্রতি বছর আমাদের ফসলি জমির শতকরা শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ হারে কমে যাচ্ছে। কৃষক বছর বছর বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে, যাতে ক্রপ প্যাটার্ন পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে এক ফসলি, দুই ফসলি ও তিন ফসলি জমিও পরিবর্তন হচ্ছে। আগামী দিনের খাদ্য চাহিদা নিশ্চিতে এক, দুই ও তিন ফসলি জমি চিহ্নিত করে তা রক্ষা করতে হবে।

ভূমি, কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত প্রস্তাবনা তৈরি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে বলে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *