নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর গত এক বছরে অনেক শিক্ষার্থীর জীবন পালটে গেছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির কারণে অনেকে শিক্ষার্থী হারিয়েছে তাদের টিউশনি, পার্ট টাইম জব। এরই মধ্যে কয়েক জন তরুণ প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তিতে জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে নিয়েছেন, তারা এখন হয়েছেন উদ্যোক্তা। অনলাইন প্ল্যাটফরম ফেসবুক ব্যবহার করে কয়েক মাস আগে ছোট পরিসরে যে ব্যবসা শুরু করেছিল, এখন তার পরিসর বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছেন তারা।
উদ্যোক্তা হওয়ার বাসনা অনেক আগে থেকেই সাব্বির খান আকাশের মনের মধ্যে উঁকি দিতো। করোনা মহামারির সময় যখন পুরো পৃথিবী থমকে গেছে তখন নিজের প্রয়াসে কিছু একটা করার ইচ্ছা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে সাব্বিরের। একসময় তিনি ভাবলেন এভাবে দিনের দিন বাড়িতে বসে থাকার চেয়ে সাহস করে কোনো কিছু নিয়ে কাজ শুরু করবেন এবং এইসব চিন্তা থেকেই বাঙালির ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প নিয়েই তার কাজ শুরু।
বাসা কুষ্টিয়া হওয়াতে কুমারখালীর মাটির তৈরি তৈজসপত্র গোপালগঞ্জে নিয়ে বিক্রির আইডিয়া মাথায় চাপল। এরপরই গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর, ফেসবুকে ই-বিলাস নামে একটি পেজ খুলে অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসার যাত্রা শুরু করেন তিনি। ১৬ সেপ্টেম্বর মো. খাইরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা মূল্যের মাটির ডিনার সেটের প্রথম অর্ডারটি পান। সাব্বিরের ই-বিলাস ফেসবুক পেজে মিলবে নিত্যপ্রয়োজনীয় ব্যবহারযোগ্য মাটির চায়ের কাপ, গ্লাস, মগ, কোক গ্লাস, জগ, হাঁড়ি, কারি বাটি, বড়-ছোট বাটি, বগি প্লেট, বিরিয়ানি প্লেট, মাটির ফিল্টার, মাটির ব্যাংক, ফুলের টব, কলমদানি, ফুলদানিসহ সব ধরনের তৈজসপত্র।
সাব্বির বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমার উদ্যোক্তা হওয়ার প্রায় পাঁচ মাস হয়ে গেছে। উদ্যোক্তা হওয়ার আগে মনে একটা প্রশ্ন সবসময় উদয় হতো, আসলে আমি পারব কি না বা আমার পণ্য কেউ কিনবে কি না। তবে যখন শুরু করি তখন আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি এবং অনেক লাভের মুখ দেখেছি। আমার বেশির ভাগ ক্রেতাই বিভিন্ন জেলার, সবচেয়ে বেশি ক্রেতা ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের। আসলে আমি নিজ উদ্যোগে কাজ করার বিষয়টা অনেক বেশি সম্মানের ও ভালোবাসার মনে করি এবং আমি আমার কাজকে যথেষ্ট সম্মান করি এবং নিজ জায়গা থেকে কাজকে অনেক ভালোবাসি। আমার কাজের ক্ষেত্রে আমার মায়ের অনেক সাপোর্ট রয়েছে। খুব কাছ থেকে মা আমাকে মানসিক ভাবে সাহায্য করেছেন।