নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: পেমেন্ট গেটওয়ে ফোস্টারের কাছে আটকে আছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ডটকমে লেনদেনের ৩৯০ কোটি টাকা। সেই টাকার মধ্যে যেসব গ্রাহক এখনো তাদের পণ্য ডেলিভারি পাননি তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী ১০ জানুয়ারির পর কিউকম ও ফোস্টারের রিপোর্ট পাওয়ার পর টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে এক জরুরি সভায় ফোস্টারে আটকে থাকা কিউকমে লেনদেনের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান এএইচএম সফিকুজ্জামান।
বৈঠকের বিষয়ে সফিকুজ্জামান জানান, কিউকম, ফোস্টারসহ সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা বসেছি। সেখানে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ৩৯৭ কোটি টাকা ফোস্টারের কাছে আটকা আছে। তার মধ্যে যেটা কিউকম ডেলিভারি করেছে, সেটা তারা দুই পক্ষ বসে আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেবে। এর মধ্যে ভোক্তাদের কত টাকা ডেলিভারি ছাড়া আটকে আছে সেটা জানাতে হবে। ১০ জানুয়ারির মধ্যে সেই তথ্য পাওয়ার পর টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউকমের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে, এমন অবস্থায় গ্রাহকের টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কিউকমের মামলার সঙ্গে এটা জড়িত না। আমরা সিআইডির সঙ্গে বসেছি। কিউকমের মামলাটা ভিন্ন জিনিস। এ টাকাটা ফোস্টারে আটকা আছে। সুতরাং এটা কিউকমের টাকা না। কিউকম যেটা ডেলিভারি দিয়েছে সেটা তো সেটেল হয়েই গেছে। কিন্তু যেটা ডেলিভারি দেয়নি সেটা দু’পক্ষ বসে যৌথ তালিকা দেবে। যেখানে ফোস্টারের টাকা জমা আছে, কিন্তু ডেলিভারি হয়নি সেই টাকাটা আমরা গ্রাহককে ফেরত দেবো।
গ্রাহকরা কিউকমের টাকা কবে থেকে পাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের সময় দিয়েছি ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। তারা তো সেই সময় রিপোর্ট দেবে। এরপর টাকাটা কীভাবে ফেরত দেবো, মামলাসহ যে বিষয়গুলো আছে সেগুলো সেটেল করবো। সেখানে প্রায় ১৬ হাজার গ্রাহক আছে। এগুলো তো টালি করে দেখতে হবে, সময়তো কিছুটা লাগবেই।
এসক্রো সার্ভিসে আটকা ২১৪ কোটি টাকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশের কাছে আমরা রিপোর্ট চেয়েছি, সেটা এখনো পাইনি। আমরা সাতদিন সময় দিয়েছি। সেই রিপোর্ট পেলে সেটা গ্রাহকদের ফেরত দেওয়া হবে।’
গত ১৬ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক চিঠিতে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ফোস্টার পেমেন্টস নামক একটি পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানে কিউকমের গ্রাহকদের একটি বড় অংকের টাকা আটকে থাকার কথা জানায়। ফোস্টার পেমেন্টস মূলত সেন্সরি সাবস্টিটিউশন ডিভাইস (এসএসডি) টেক নামক একটি কোম্পানির পেমেন্ট সার্ভিস উইং। বাংলাদেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়া, মিয়ানমার ও সিঙ্গাপুরেও তারা রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে পণ্য দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়েও পণ্য সরবরাহ না করার অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
আরো পড়ুন: