আন্তর্জাতিক

কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে হামলায় ৬০ আফগান ও ১৩ মার্কিন সেনা নিহত

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে। এতে অনেক মানুষ হতাহত হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম ইউএস নিউজ বলছে, বিস্ফোরণে একাধিক মার্কিন সেনা এবং অন্তত ৬০ ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১৪০।

কাবুল বিমানবন্দরের অ্যাবি গেটে, যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ সেনারা অবস্থান নিয়ে হাজার হাজার মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল, তার ঠিক বাইরে জোড়া বিস্ফোরণ ঘটে।

এদিকে, ইসলামিক স্টেট (আইএস) এরই মধ্যে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এর আগে এই ঘটনার জন্য মার্কিন কর্তৃপক্ষও আইএসকে দায়ী করেছিল। ইসলামিক স্টেটের আফগান সহযোগী সংগঠন ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএসআইএস-কে) যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানবিরোধী একটি সংগঠনটি হিসেবে পরিচিত।

নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে বলে তালেবানের একজন কর্মকর্তা বলছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন মার্কিন সেনা রয়েছে।

আর, পেন্টাগনের মুখপাত্র বলছেন—নিহতদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকসহ বেশ কিছু বেসামরিক মানুষ রয়েছেন।

প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় বিমানবন্দরের কাছে ব্যারন হোটেলের আশপাশে। এই হোটেলে যুক্তরাজ্যে যাঁরা যেতে চাইছিলেন, তাঁদের নথিপত্র ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করছিলেন।

প্রথম বিস্ফোরণের পর গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা

যায় এবং এরপরই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ হয় বিমানবন্দরের ঢোকার অন্যতম প্রধান গেট—অ্যাবে গেটের কাছে।

এগারো দিন আগে তালেবানের হাতে কাবুলের পতন হওয়ার পর এই হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়েই ৮২ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিদেশিদের পাশাপাশি আফগানরাও রয়েছেন তাদের মধ্যে।

দেশ ছাড়ার চেষ্টায় হাজার হাজার আফগান মরিয়া হয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে ও বাইরে অপেক্ষা করছেন প্রতিদিন।

এই নাজুক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস সেখানে হামলা চালাতে পারে বলে খবর আসছিল গত কয়েক দিন ধরেই।

কাবুল বিমানবন্দর সন্ত্রাসী হামলার ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ রয়েছে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের ওই এলাকা এড়িয়ে চলতে বলেছিল গত বুধবার।

এই সতর্কবার্তার মধ্যেই যুক্তরাজ্যের আর্মড ফোর্সেস বিভাগের জুনিয়র মন্ত্রী জেমস হিপি বৃহস্পতিবার বিবিসি রেডিও ফোরকে বলেন, কাবুল বিমানবন্দরে মারাত্মক হামলার চেষ্টা হতে পারে বলে ‘খুবই বিশ্বাসযোগ্য’ খবর আছে তাঁর কাছে। তিনি বলেছিলেন, সম্ভবত কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেরকম কিছু ঘটতে পারে।

এরপর আফগানিস্তানের স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি জানান, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এবং এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অবহিত করা হয়েছে।

/জেড এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *