আন্তর্জাতিক

কাবুলে নিহত ১৩ মার্কিন সেনার নাম প্রকাশ

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের বিমানবন্দরে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সেনাসহ কমপক্ষে ১৭০ আফগান নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবারের এই হামলার পর তাৎক্ষণিকভাবে নিহত সেনাদের নাম প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে শনিবার নিহত ওই ১৩ সেনার নাম প্রকাশ করেছে পেন্টাগন।
শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি। কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলায় নিহত ওই ১৩ মার্কিন সেনার মধ্যে ১১ জন মেরিন সেনা, একজন নৌবাহিনীর নাবিক এবং অন্যজন মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিশেষ শাখার সৈনিক। মার্কিন নৌবাহিনীর নিহত ওই নাবিককে মেরিন কর্পস ইউনিটে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
হামলায় নিহত মার্কিন সেনাদের নাম১১ জন মেরিন সেনা: স্টাফ সার্জেন্ট ড্যারিন টি. হুভার (৩১), সার্জেন্ট জোহানি রোজারিওপিচার্দো (২৫), সার্জেন্ট নিকোল এল. জি (২৩), কর্পোরাল হান্টার লোপেজ (২২), কর্পোরাল দায়েগান ডব্লিউ পেইজ (২৩), কর্পোরাল হামবার্টো এ. সানচেজ (২২), ল্যান্স কর্পোরাল ডেভিড এল এসপিনোজা (২০), ল্যান্স কর্পোরাল জ্যারেড এম. স্কিমিৎজ (২০), ল্যান্স কর্পোরাল রাইলি জে. ম্যাককলাম (২০), ল্যান্স কর্পোরাল ডাইলান আর. মেরোলা (২০) এবং ল্যান্স কর্পোরাল করিম এম. নিকৌয়ি (২০)।
এছাড়া মার্কিন নৌবাহিনীর ম্যাক্সটন ডব্লিউ. সোভিয়াক (২২) এবং মার্কিন সামরিক বাহিনীর আর্মি স্টাফ সার্জেন্ট রায়ান সি. ক্নাউস (২৩) বৃহস্পতিবারের ওই হামলায় নিহত হন।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাবুল বিমানবন্দরে পরপর দু’টি বিস্ফোরণ ঘটে।  প্রথম বিস্ফোরণটি হয় অ্যাবেই গেটের কাছে। যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিল। হামলার পর গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে ব্যারন হোটেলের পাশে। যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছিল।
আফগান সাংবাদিক বিলাল সারওয়ারি এক টুইটে সেসময় জানান, বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের বাইরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পয়ঃনিষ্কাশন খালের পাশে নারী শিশুসহ অনেক আফগান অপেক্ষা করছিলেন। সেখানেই ভিড়ের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয়। বিস্ফোরণের পর আরেক হামলাকারী গুলিবর্ষণ শুরু করে।
বর্বর এই হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলার পেছনে দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তি নিশ্চিত করার কথাও জানিয়েছিলেন তিনি।
জো বাইডেন বলেন, ‘আমরা ক্ষমা করবো না। আমরা এই হামলার কথা ভুলেও যাবো না। আমরা হামলাকারীদের অবশ্যই খুঁজে বের করবো এবং জড়িতদেরকে এর মূল্য দিতে হবে।’
এদিকে হামলার পরপরই জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর দায় স্বীকার করে। জবাবে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে আইএস জঙ্গিদের ওপর ড্রোন হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে দু’জন নিহত হয়। নিহত ওই দু’জনকে কাবুল বিমানবন্দরে হামলার পরিকল্পনাকারী বলে উল্লেখ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘এই ড্রোন হামলা এটাই শেষ নয়। (কাবুল বিমানবন্দরে) হামলার মতো জঘন্য হামলাকারীদের তল্লাশি আমরা অব্যাহত রাখবো এবং তাদেরকে অবশ্যই চড়া মূল্য দিতে হবে।’

/জেড এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *