প্রচ্ছদ

কাবুলের শিশুদের মুখে হাসি ফোটাল যে গাড়ি

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: তিন মাস পর আফগানিস্তানের অনাথ শিশু আরেজো আজিজির মুখে হাসি ফুটল। গতকাল রোববার এতিমখানার দরজায় আবারও কড়া নেড়েছে ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগারের গাড়ি। পছন্দের বই নিয়ে আবারও হাজির হয়েছে তারা। আর তা দেখে হাসি ফুটেছে ১১ বছর বয়সী আরেজো আজিজিসহ এতিমখানার অন্য বইপ্রেমী শিশুদের মুখে।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে আরেজো আজিজি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছে, ‘আমি সত্যিই আনন্দিত। পছন্দের বইগুলো আবারও পড়তে পারছি।’

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের অনেক স্কুলে নিজস্ব গ্রন্থাগার নেই। তালেবানের ক্ষমতা দখলের আগে গত কয়েক বছরে ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগারগুলোর বদৌলতে নিজেদের পছন্দের বই হাতের কাছে পেয়ে আসছিল শিশুরা। তালেবান ক্ষমতা দখল করার পর তিন মাস ধরে কাবুলের রাস্তায় দেখা যায়নি ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগারের গাড়ি। গতকাল আবারও সচল হয়েছে এগুলো।

চারমাগজ নামে স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে বাস ভাড়া করে ওই ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার গড়ে তোলা হয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্নকারী আফগান নাগরিক ফ্রেশতা কারিম সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা।

চারমাগজের উপপ্রধান আহমদ ফাহিম বারাকাতি জানান, গত আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে তালেবান ক্ষমতা দখল করার পর তাঁরা আর অনুদান পাচ্ছিলেন না। তিনি জানান, তালেবান সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কয়েক সপ্তাহ আগে ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার আবারও সচল করার অনুমতি দেয়। তবে এই বাস ভাড়া করার ব্যাপারে পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে কয়েক দিন আগে। কারণ, পরিবহন মন্ত্রণালয়ই বাসগুলোর মালিক।

ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগার সচল হওয়ায় শিশু পাঠকদের পাশাপাশি গ্রন্থাগারিক রামজিয়া আবদি খায়েলের চোখেমুখেও আনন্দ ফুটে উঠেছে। ২২ বছর বয়সী এ তরুণ বলেন, ‘এ এক আনন্দের অনুভূতি। এখন তো স্কুলগুলোও বন্ধ। আমাদের পথশিশুরা রয়েছে। তাদের কাছে বই পৌঁছে দেওয়াটা আনন্দের কাজ, কারণ, তারা স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় না। ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগারের মধ্য দিয়ে সে কাজটা আমি করতে পারি। আমাদের এখানে ইসলামি বই, ইংরেজি ও দারি ভাষায় লেখা গল্পের বই, রং করার বই এবং খেলাধুলাবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের বই আছে।’

এদিকে চারমাগজের উপপ্রধান আহমদ ফাহিম বারাকাতির ভাষ্য অনুযায়ী, চারমাগজের কাছে এখন যে পরিমাণ তহবিল আছে, তা দিয়ে কমপক্ষে এক মাস ভ্রাম্যমাণ গ্রন্থাগারগুলো সড়কে সচল রাখা যাবে। এরপরও যেন তা সচল থাকে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে আন্তর্জাতিকভাবে তহবিল সংগ্রহ করা হচ্ছে। আশা করছি, পর্যাপ্তসংখ্যক অনুদানকারী পেয়ে যাব।’

আরো পড়ুন:

টোকিওর রাজপ্রাসাদে উৎসব || ২০ বছরে পা দিয়েছেন রাজকন্যা

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *