আগামী ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কানাডার ৪৪তম ফেডারেল নির্বাচন। অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন দুই নারীসহ পাঁচ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান।
কানাডার প্রধান তিন রাজনৈতিক দল থেকে তারা মনোনয়ন পেয়েছেন। লিবারেল থেকে একজন, কনজার্ভেটিভ পার্টি একজন এবং এনডিপি তিনজন। তারা হলেন, অন্টারিও প্রদেশের ওশোয়া আসনে সরকারি দল লিবারেল থেকে আফরোজা হোসেন, টরন্টোস্থ স্কারবোরো সাউথ-ওয়েস্ট আসনে কনজার্ভেটিভ পার্টি থেকে মহসিন ভূইয়া, এনডিপি থেকে স্কারবোরো সেন্টার আসনে ফাইজ কামাল, আলবাট্রার এনডিপি থেকে খালিস আহমেদ তমাল এবং ক্যালগরি থেকে এনডিপির গুলশান আক্তার। এর মধ্যে গত ২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন খালিশ, আফরোজা এবং ফাইজ। এবার তাদের সঙ্গে যুক্ত হলেন, মহসিন ও গুলশান।
গত নির্বাচনে আফরোজা ২৫.৪ ভাগ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিলেন। উক্ত আসনে কনজারভেটিভ পার্টির ক্লিন কেরি ৩৮.৯ ভাগ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। ক্যালগেরির সিগনাল হিল আসন থেকে খালিশ কনজাভেটিভ পার্টির রন লাইপার্টের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।
এদিকে গুলশান আক্তার ২০১৯’এর স্থানীয় প্রাদেশিক নির্বাচনে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। আর ইতোপূর্বে টরন্টো সিটি কাউন্সিলের কমিশনার পদে লড়াই করে মহসিন ভূইয়া তৃতীয় হন।
খালিস আহমেদ
মাগুরার সন্তান ভূতত্ত্ববিদ খালিস আহমেদ। আলবাট্রা থেকে তিনি ইত্তেফাককে জানান, ২০১৫ ক্যালগেরি সিগনাল হিল থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারের আসনের উপ নির্বাচনে তিনি প্রথম অংশ নেন। তাতে তিনি মূলধারার রাজনীতিতে অভিষিক্ত হয়ে সকলের দৃষ্টি কাড়েন। পরে ২০১৯ সালে সিগনাল হিল আসনে এবং এবার নোস হিল আসনে লড়ছেন। বার বার আসন পরিবর্তন সম্পর্কে বলেন, এটা দলের সিদ্ধান্ত।
গুলশান আক্তার
দিনাজপুরের মেয়ে ডাক্তার গুলশান আক্তার। ক্যালগেরি থেকে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, আমার মনোনয়ন পেতে তেরো মাস সময় লেগেছে। অথচ আমি আগেও প্রভেন্সিয়াল এম এম পি পদে ইলেকশন করেছি। এবার এন ডি পি খুব যাছাই-বাছাই করে মনোনয়ন দিচ্ছে। আমার আসন ক্যালগরি কনফেডারেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কঞ্জারভেটিভের ঘাঁটি। আমি সেই ঘাঁটি ভেঙ্গে বিজয়ের আশা করি।
আফরোজা এপিলেপ্সি
বিক্রমপুরের মেয়ে আফরোজা এপিলেপ্সি টরন্টোর ম্যানেজার। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা থেকে আমাদের জানান, আমি এবারও লিবারেল থেকে মনোনয়ন পেয়েছি। আমিই একমাত্র এবং প্রথম বাংলাদেশি, যিনি বিগত ২০১৯ সালের ফেডারেল নির্বাচনে সরকারি দল লিবারেল পার্টির নমিনেশন পেয়েছিলাম। গত দুই বছরে আমি অনেক বেশি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিয়েছি। এলাকার জনগণের সাথে কোভিডসহ সামাজিক কাজে নানাভাবে এখনো জড়িত।
মহসিন ভূইয়া
ঢাকার নবাবগঞ্জের সন্তান মহসিন ভূইয়া একজন ব্যবসায়ী। তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ হচ্ছেন- সাবেক পুলিশ প্রধান এবং সরকারি দলের আইন শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী বিল ব্লেয়ার। মহসিন তার নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, দলমত নির্বিশেষে আমি আমার আসনের সাত-আট হাজার বাংলাদেশিদের ভোট আশা করি। আমি মনে করি- এটা আমার ভোটব্যাংক!
ফাইজ কামাল
স্কারবোরো সেন্টার আসনে ফাইজ কামালের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর নির্বাচনী ওয়েব সাইডে জানা যায় এবং তিনি ঘোষণা দিয়েছেন- নতুন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে আমি গর্বিত। কানাডিয়ান মূল্যবোধের পক্ষে। আমরা অন্যায়, অসমতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চাই, এবং প্রগতিশীল পদক্ষেপগুলি দেখতে চাই এবং পুনর্মিলন ঘটাতে চাই। আমরা কানাডিয়ান হিসেবে গর্ববোধ করতে চাই।
অপর দিকে ওন্টারি প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে রাজধানী অটোয়ার পার্শ্ববর্তী নেপান আসন থেকে লিবারেল পার্টি থেকে শাহ বাহাউদ্দিন মনোনয়ন পেয়েও এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ গত ১৪ মার্চ প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমানে ডলি বেগম অন্টারিও পার্লামেন্টে একমাত্র বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত এনডিপি’র সাংসদ। ডলির এই বিজয়-অর্জন ছিলো কানাডায় বাংলাদেশি হিসেবে ইতিহাস গড়ার বিজয়!
/জেড এইচ